সংলাপ ছাড়া রাজনৈতিক সংকটের মীমাংসা সম্ভব না, মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ প্রয়োজন; সংলাপ ছাড়া দলগুলোর মধ্যকার যে সংকট, তা রাজপথে মীমাংসা হবে না।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক শেষে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, "ওনারাও বিশ্বাস করেন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আসলেই ডায়লগ প্রয়োজন। ডায়লগ ছাড়া এই সংকটগুলো রাজপথে সমাধান করার বিষয় নয়।"
তিনি বলেন, "আমরা একটা জিনিস স্পষ্ট করে বলেছি যে নির্বাচনের জন্য একটা অনুকূল পরিবেশ প্রয়োজন। যে সংকটটা গ্রাস করছে দেশে সেটা হলো রাজনৈতিক সংকট, যার সাথে আমার কর্মের কোনো সংঘাত নেই। এই সমস্যাগুলো যদি রাজনৈতিকভাবে সমাধান হয়ে যায় তাহলে আমাদের জন্য নির্বাচনের আয়োজন করা অনেক স্বস্তিকর ও সহজ হবে।"
সিইসি বলেন, "আমরা বিশ্বাস করি দলগুলোর একসাথে বসা উচিত, চা খাওয়া উচিত। তারপরে আলোচনা করে সংকট নিরসন করা উচিত।"
এর আগে বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আসেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। সেখানে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও অবসরপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব ও কমিশন সচিব জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর পিটার হাস জানান, অক্টোবরের শুরুর দিকে বাংলাদেশে প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ দল পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র।
পিটার হাস বলেন, "প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ দলটিতে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞরা থাকবেন, যাদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে।"
মার্কিন রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র কেবল সে নির্বাচনের প্রতিই আগ্রহী যা অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং যেখানে বাংলাদেশের মানুষকে কে শাসন করবে তা বেছে নেয়ার ক্ষমতা জনগণের হাতেই ন্যস্ত।"
"আমরা আরপিও সংশোধনী, রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন এবং পর্যবেক্ষক প্রেরণ করে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছি", যোগ করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
বৈঠকে মার্কিন দূত আরও জানতে চান কেন 'ভাইব্রেন্ট' পলিটিক্যাল পার্টিগুলোকে নিবন্ধন দেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে সিইসি বলেন, "উনি গণমাধ্যম সূত্রে জানতে পেরেছেন যে যাদেরকে নিবন্ধন দেয়া হচ্ছে তারা ওইভাবে সুপরিচিত (ভাইব্রেন্ট) নয়। এই প্রশ্নে আমরা বলেছি দলের নিবন্ধন দিতে গেলে যে ক্রাইটেরিয়াগুলো পূরণ করতে হয়, আমাদের নীতিতে যেগুলো আছে আমরা সেগুলো কঠোরভাবে অনুসরণ করেছি। সে কারণে হয়তো অনেক দলই নিবন্ধন পায়নি। মাত্র দু'টি দল পেতে পারে। তারা ক্রাইটেরিয়াগুলো জেলা-উপজেলা পর্যায়ে পূরণ করতে পেরেছে।"
নির্বাচন চলাকালে সাংবাদিকদের মোটরসাইকেলের কী হবে এ ব্যাপারেও মার্কিন রাষ্ট্রদূত সিইসির কাছে জানতে চান।
"আমরা বলেছি এ বিষয়টি আমাদের বিবেচনায় আছে। আমরা জানিয়ে দিয়েছি যে স্থানীয় রিটার্নিং অফিসাররা ওখানকার অবস্থা বিবেচনা করে মোটরসাইকেলের অনুমতি প্রদান করবেন। আমরাও কেন্দ্রীয়ভাবে এ বিষয়টি পর্যালোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নেব," যোগ করেন সিইসি।
সিইসি আরও বলেন, "আরপিও সংশোধনীর বিষয়ে উনি শুনেছেন, দেখেছেন যে আমাদের ক্ষমতা কমিয়ে ফেলা হয়েছে। আমরা ব্যাখ্যা করে বলেছি কীভাবে এটা বাড়ানো হয়েছে।"