দেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থায় হস্তক্ষেপের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ৫০ সম্পাদক
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা স্থগিত করতে বিশ্বনেতাদের আহ্বানের প্রতিবাদ জানিয়ে দেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকাসমূহের মোট ৫০ জন সম্পাদক শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, নোবেল বিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন দেশের সুশীল সমাজের সদস্যদের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে লেখা খোলা চিঠি দেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থায় সরাসরি হস্তক্ষেপ।
শতাধিক নোবেল বিজয়ীসহ ১৭০ জনেরও বেশি বিশ্বনেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ২৮ আগস্ট এক খোলা চিঠিতে লিখেছিলেন, 'সম্প্রতি তাকে [ড. ইউনূস] যেটির লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, সেটিকে আমরা ক্রমাগত বিচারিক হয়রানি বলে মনে করি, যা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।'
৫০ সম্পাদকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৪(৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন। এ ধরনের চিঠি প্রদানের মাধ্যমে তারা অনৈতিক, বেআইনি ও অসাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ করেছেন বলে আমরা মনে করি।'
'এ ধরনের বিবৃতি বা খোলা চিঠি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং বাংলাদেশের আইনে শ্রমিকদের প্রদত্ত অধিকারসংক্রান্ত বিধানাবলির সম্পূর্ণ পরিপন্থী। আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত এবং নোবেল বিজয়ীগণের এ ধরনের বিবৃতি এবং চিঠি অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনৈতিক।'
বিবৃতিতে বলা হয়, একজন অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে মামলা ও বিচার করা যাবে না এমন দাবি ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পরিপন্থী।
'আমরা মনে করি তারা মামলা সম্পর্কে পুরোপুরি না জেনে এমন দাবি করেছেন। তাই তারা অথবা তাদের প্রতিনিধি এসে মামলায় ড. ইউনূসকে আদৌ হয়রানি করা হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের এই আহ্বান জানিয়েছেন এবং আমরা তা সমর্থন করি,' বিবৃতিতে বলা হয়।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও নির্বাচন নিয়ে বিশ্বনেতাদের বক্তব্যকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল বলে মন্তব্য করেন সম্পাদকেরা।
তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা এবং শ্রমিক অধিকারের বিষয়ে সম্মান প্রদর্শনের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন ইকবাল সোবাহান চৌধুরী, সম্পাদক, ডেইলি অবজারভার; গোলাম রহমান, সম্পাদক, আজকের পত্রিকা; তাসমিমা হোসেন, সম্পাদক, ইত্তেফাক; আবুল কালাম আজাদ, প্রধান সম্পাদক, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা; ইমদাদুল হক মিলন, প্রধান সম্পাদক, কালের কণ্ঠ; আলমগীর হোসেন, সম্পাদক, সমকাল; সাইফুল আলম, সম্পাদক, যুগান্তর; নাঈম নিজাম, সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন; ফরিদ হোসেন, সম্পাদক, ইউএনবি; শ্যামল দত্ত, সম্পাদক, ভোরের কাগজ; নাঈমুল ইসলাম খান, ইমেরিটাস সম্পাদক; আলতামাশ কবির, সম্পাদক, সংবাদ; আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, সম্পাদক, পিপলস টাইম; রেজাউল করিম লোটাস, সম্পাদক, ডেইলি সান; শাহজাহান সরদার, সম্পাদক, বাংলাদেশ জার্নাল; নাসিমা খান মন্টি, সম্পাদক, আমদের নতুন সময়; রফিকুল ইসলাম রতন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, বাংলাদেশ বুলেটিন; ফারুক আহমেদ তালুকদার, সম্পাদক, আজকালের খবর; সন্তোষ শর্মা, সম্পাদক, কালবেলা; শরীফ শাহাবুদ্দিন, সম্পাদক, বাংলাদেশ পোস্ট; শামীমা এ খান, সম্পাদক, জনকণ্ঠ; কমলেশ রায়, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, সময়ের আলো; মুস্তাফিজ শফি, সম্পাদক, প্রতিদিনের বাংলাদেশ; মোস্তফা মামুন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, দেশ রূপান্তর; বেলায়েত হোসেন, সম্পাদক, ভোরের ডাক; চৌধুরী জাফরুল্লাহ শারাফত, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, দৈনিক বাংলা; শামীম সিদ্দিকি, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, আলোকিত বাংলাদেশ; আবদুল মজিদ, সম্পাদক, সংবাদ সারাবেলা; রিমন মাহফুজ, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, সংবাদ প্রতিদিন; মফিজুর রহমান খান বাবু, সম্পাদক, বাংলাদেশের আলো; আরিফুর রহমান দোলন, সম্পাদক, ঢাকা টাইমস; নূর হাকিম, সম্পাদক, সকালের সময়; মো. জসিম, সম্পাদক, আমার বার্তা; আখলাকুল আম্বিয়া, সম্পাদক, স্বাধীন বাংলা; এস এম নূরে আলম সিদ্দিকী, সম্পাদক, আজকের দর্পণ; ফরিদ বাঙালি, সম্পাদক, লাখো কণ্ঠ; ড. আসাদুজ্জামান, সম্পাদক, বাংলাদেশ সমাচার; কিশোর আদিত্য, সম্পাদক, প্রথম কথা; দীপক আচার্য্য, সম্পাদক, দ্য সাউথ এশিয়ান টাইমস; আবু সাঈদ, সম্পাদক, আজকের সংবাদ; আতিকুর রহমান চৌধুরী, সম্পাদক, দর্পণ প্রতিদিন; রফিকুল ইসলাম, সম্পাদক, আলোর বার্তা; মো. সেলিম, সম্পাদক, ডেইলি ইভিনিং নিউজ; মোস্তফা হোসেন চৌধুরী, সম্পাদক, অগ্রসর; নাজমুল হক সরকার, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, বর্তমান; শাহাদাত হোসেন শাহীন, সম্পাদক, গণমুক্তি; মো. সাইদুল ইসলাম, সম্পাদক, প্রতিদিনের সংবাদ; নাজমুল আলম তৌফিক, সম্পাদক, ডেইলি সিটিজেন টাইমস; হেমায়েত হোসেন, সম্পাদক, কান্ট্রি টুডে; এবং শেখ জামাল, সম্পাদক, মুখপাত্র।