সিলেটের জলাবদ্ধতা: এক দুর্ভোগ থেকে রেহাই দিতে আরেক দুর্ভোগ!
ষোল বছর আগে নগরের মির্জাজাঙ্গাল এলাকায় হোটেল 'নির্ভানা ইন' নির্মাণের সময় এটির সীমানা ফটক সড়ক থেকে অন্তত এক ফুট উঁচুতে ছিলো। অথচ এখন হোটেলের গেট থেকে সড়ক উঁচু।
এই হোটেলটির মালিক সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি তাহমিন আহমদ। তিনি বলেন, "প্রতিবার সংস্কারের সময় সড়ক একটু একটু উঁচু হতে থাকে। মাঝখানে মাটি ভরাট করে আমিও গেট একটু উঁচু করি। কিন্তু তারপরও ২০২৩ সালে এসে সড়ক থেকে আমার হোটেলের গেট প্রায় ৩ ইঞ্চি নিচে নেমে গেছে।"
সিলেট নগরের বেশিরভাগ সড়কের চিত্রই এমন। প্রতিবার সংস্কারের নামে উঁচু করা হচ্ছে সড়ক। ফলে অনেক বাসাবাড়ি, দোকান, মার্কেট সড়কের নিচে পড়ে যাচ্ছে। এতে বৃষ্টি হলেই এসব বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। আবার জলাবদ্ধতা কমাতে উঁচু করা হচ্ছে অনেক সড়ক।
সিলেট নগরের আম্বরখানা থেকে কুমারগাও পর্যন্ত সড়ক সংস্কার করা হচ্ছে। বৃষ্টি হলেই এই সড়কে পানি জমে। বৃষ্টিতে পিচ উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের। তাই পিচঢালা সড়ককে এবার আরসিসি সড়কে রূপান্তর করা হচ্ছে। জলাবদ্ধতা এড়াতে সড়কটি উঁচু করা হচ্ছে প্রায় এক ফুট।
এতে এক দুর্ভোগ থেকে রেহাই দিতে আরেক দুর্ভোগ তৈরি করা হচ্ছে। সড়ক উঁচু করায় নিচু হয়ে পড়েছে আশপাশের দোকানপাট ও বাসাবাড়ি। ফলে এখন বৃষ্টি হলেই পানি ঢুকে পড়ে দোকানপাট ও বাসাবাড়িতে।
গত ৩০ বছরে সিলেট নগরের সড়ক কতটুকু উঁচু হয়েছে বা আগামী ৩০ বছরে কতটুকু উঁচু হবে এরকম কোন তথ্য বা পরিকল্পনা নেই নগরের সড়ক নির্মাণ ও সংস্কারের দায়িত্বে থাকা দুই প্রতিষ্ঠান সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) বা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) কাছে।
কেন উঁচু হচ্ছে সড়ক
বৃষ্টিপ্রবণ অঞ্চল সিলেট। বছরজুড়েই বৃষ্টি লেগে থাকে। জলাবদ্ধতা, বন্যা এখানকার নিত্যকার সমস্যা। ভারি বৃষ্টিতে দ্রুত ভাঙন দেখা দেয় সড়কে। খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। তাই অনেক সড়ক বছরে একাধিকবার সংস্কার করতে হয়। কিন্তু সংস্কারের সময় আগের বিটুমিন, বালু-কংক্রিট সরানো হয় না। এর উপরই বিটুমিন ঢেলে কার্পেটিং করা হয়। ফলে প্রতিবার সংস্কারের সময় দুই থেকে তিন ইঞ্চি পর্যন্ত উঁচু হয়ে যায় সড়ক।
২০২২ সালে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয় সিলেটে। তলিয়ে যায় নগরের বেশিরভাগ সড়ক। এরপর থেকে ভারি বৃষ্টি হলে নগরের বিভিন্ন সড়কে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সড়কে পানি জমা ঠেকাতে নগরের অনেক সড়কই প্রায় এক ফুট পর্যন্ত উঁচু করে নির্মাণ করা হচ্ছে। এতেও সড়ক উঁচু হয়ে বাসাবাড়ি ও দোকানপাট নিচু হয়ে যাচ্ছে।
নগরের ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকা জিন্দাবাজারের পুরোনো বিপণিবিতান রাজা ম্যানশন। গত কয়েকবছরে সংস্কারের মাধ্যমে উঁচু করে ফেলা হয়েছে জিন্দাবাজার-জল্লারপাড় সড়ক। এতে রাজা ম্যানশন এখন সড়ক থেকে প্রায় দেড় ফুট নিচে নেমে গেছে। ফলে বৃষ্টি হলেই সড়কের পানি রাজা ম্যানশনের ভেতরে ঢুকে পড়ে। মার্কেটের ভেতর দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। একইভাবে এই এলাকার অন্যান্য মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন্ট পার্কিংপ্লেসেও বৃষ্টির পানি ঢুকে পড়ে।
রাজা ম্যানশনের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাসুদ খান বলেন, "আগেও অনেক বৃষ্টি হয়েছে সিলেটে। কিন্তু আমাদের মার্কেটে কখনো পানি ঢুকেনি। কিন্তু গত বছর থেকে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। ভারি বৃষ্টি হলেই মার্কেট হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে যাচ্ছে। এতে নিচতলার ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হচ্ছে। চলতি বছরেই অন্তত তিনবার মার্কেটে পানি ঢুকেছে।"
তিনি বলেন, মার্কেট থেকে সড়ক অনেক উপরে উঠে গেছে। ড্রেনও উপরে উঠে গেছে। এতে বৃষ্টির পানি সড়ক থেকে গড়িয়ে মার্কেটে ঢুকে যাচ্ছে।
একই সমস্যার কথা জানালেন নগরের সরকারি আবাসন প্রকল্প শাহজালাল উপশহর এলাকার বাসিন্দা সাহেদ আহমদ। তিনি বলেন, "উপশহরের সবগুলো বাসার নিচতলা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বাসা থেকে সড়ক উঁচুতে। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই পানি ঘরে ঢুকে যায়। ফলে এই এলাকার বাসা কেউ আর ভাড়া নিতে চায় না।"
সংস্কারের সময় কেন পুরনো বিটুমিন অপসারণ করা হয় না
সড়কে সাধারণ দুই ধরণের কাজ করা হয়- রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রকৌশলীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে আগের বিটুমিনের উপরই নতুন করে বিটুমিন দিয়ে দেওয়া হয়। তবে উন্নয়নের ক্ষেত্রে মাটি খুঁড়ে আগেরগুলো সরিয়ে কাজ করার কথা। অন্যান্য দেশেও তাই করা হয়। কিন্তু এখানে সাধারণত তেমনটি করা হয় না। পুরনো পিচের উপরই আবার বিটুমিন ঢেলে সংস্কার করা হয়। কেন এমনটি করা হয় তার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূলত টাকা বাঁচাতেই সংস্কারের সময় খুঁড়ে আগের বিটুমিন, বালু, পাথর সরানো হয় না।
এ প্রসঙ্গে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরপ্রকৌশল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান, নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম বলেন, "একটা সড়ক সংস্কারে অনেক টাকা লাগে। বেশি টাকা খরচ হয় বিটুমিনের জন্য। এটি আমদানি করতে হয়। আগের বিটুমিন না তুলে কার্পেটিং করলে বিটুমিনসহ অন্যান্য মালামাল অনেক কম লাগে। এতে খরচ অনেকটা কমে যায়। মাটি খুঁড়ে পুরনো সবকিছু ফেলে দিয়ে সড়ক সংস্কার করতে হলে খরচ প্রায় দশগুণ বেড়ে যাবে।"
টাকা বাঁচানোর জন্যই এটা করানো হয় বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমানও।
তিনি বলেন, "সড়কে দুই ধরণের সংস্কার কাজ করা হয়। একধরণের কাজে পুরনো সব কিছু সরিয়ে নতুন করে বালু পাথর ও বিটুমিন দেয়া হয়। এক্ষেত্রে সড়ক উঁচু হয় না। আরেকক্ষেত্রে সড়কের যে জায়গা নষ্ট হয়েছে সেই জায়গায় পুরনো বিটুমিন রেখেই নতুন করে বিটুমিন ঢালা হয়।"
তিনি বলেন, "বিদেশে সাধারণ প্রথম ধরণের কাজই হয়। পুরনো সব খুঁড়ে ফেলে দেয়া হয়। কিন্তু আমাদের এখানে সাধারণত ফেলা হয় না। ফলে প্রতিবার সংস্কারের সময় সড়ক উপরের দিকে উঠে।"
নুর আজিজুর রহমান বলেন, "প্রকল্প প্রস্তাবনার সময় ব্যয়ের হিসেব দিতে হয়। ব্যয় অধিক হয়ে গেলে প্রকল্প পাশ হয় না। আমাদের প্রকল্পের বরাদ্দ অনুযায়ী কাজ করতে হয়।"
এ প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, "সড়ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মাটি খুঁড়ে আগেরগুলো সরিয়ে কাজ করার কথা। তবে অনেকক্ষেত্রে তা মানা সম্ভব হয় না। কারণ বাজেটে ঘাটতি থাকে। ফলে অনেক সড়কেই বিটুমিনের পুরুত্ব এক ফুটের মতো হয়ে গেছে। এগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে।"
সওজ ও সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলীরা বাজেট স্বল্পতার কথা বললেও রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ। সওজের এক ঠিকাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, "সড়ক উন্নয়নের কিছু প্রকল্পের কার্যাদেশে সড়ক খুঁড়ে আগের মালামাল সরানোর কথা উল্লেখ থাকে। এজন্য বাড়তি বরাদ্দও দেয়া হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা টাকা বাঁচাতে সড়কে পুরনো বিটুমিন, বালু, পাথর সরায়নি। এই অনিয়মের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরাও জড়িত।"
'পানি জমছে, সড়ক উঁচু করে দাও'
সম্প্রতি নগরের শিবগঞ্জ এলাকায় একটি আরসিসি ঢালাই সড়ক নির্মাণ করে সিটি করপোরেশন। সংস্কারের সময় প্রায় এক ফুট উঁচু করা হয় সড়ক। বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা ঠেকাতেই এমনটি করা হয়। বৃষ্টি হলে এই সড়কে হাঁটু পানি হয়ে যেতো। কিন্তু উঁচু করার পর সড়কে আর পানি উঠে না। তবে সড়কের পানি গড়িয়ে আশপাশের বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে ঢুকে পড়ে।
অপরিকল্পিতভাবে সড়ক উঁচু করার ফলে এমনটি হচ্ছে বলে মনে করেন সিলেট ঠিকাদার ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি রাখাল দে। তিনি বলেন, "পানি জমলেই সড়ক উঁচু করে দাও- এই সহজ তরিকায় জলাবদ্ধতার সমাধান খোঁজা হচ্ছে। কিন্তু যখনই রাস্তা উঁচু হচ্ছে তখনই দুই পাশের বাসা অটোমেটিক নিচে পড়ে যাচ্ছে। এতে বৃষ্টির পানি বাসাবাড়িতে ঢুকে পড়ছে। সড়ক উঁচু করার আগে এটা কেউ ভাবছে না।"
রাখাল দে বলেন, "আমাদের এখানে মূল সমস্যা হলো দুর্নীতি আর পরিকল্পনার অভাব। দীর্ঘমেয়াদী কোন পরিকল্পনা নেই। এখন একটা সমস্যা দেখা দিলো, তো কোনরকমে এটার একটা সমাধান দিয়ে দেওয়া হয়। এই সমাধানের কারণে আরো সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে কি-না, বা ভবিষ্যতে এর কী প্রভাব পড়বে তা ভেবে দেখা হচ্ছে না।"
সিলেটের শীর্ষ এই ঠিকাদার আরো বলেন, "আগে সিলেট নগর খোলামেলা ছিলো। অনেক জলাশয় ছিলো। ফলে বৃষ্টি হলে পানি দ্রুত নেমে যেতো। একারণে মানুষজন আগে বাড়িঘর খুব একটা উঁচু করে নির্মাণ করেনি। পুরনো এই বাড়িগুলোই সড়ক উঁচু হওয়ায় এখন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।"
তবে অপরিকল্পিতভাবে বাসাবাড়ি নির্মাণের কারণেও এমন সমস্যা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, "সিলেটে যেহেতু ঘনঘন বন্যা হয় তাই এখন আমরা সড়কগুলো উঁচু করার পরিকল্পনা করেছি। বিশেষত আরসিসি সড়কগুলো। আর আইনেই আছে, মহাসড়কের পাশের স্থাপনাগুলো উঁচু করে নির্মাণ করতে হবে।"
সড়ক উঁচু হয়ে যাওয়াকে নগরের অন্যতম সমস্যা উল্লেখ করে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি তাহমিন আহমদ বলেন, "আগামী ৫০ বছরে সড়ক কতটুকু উঁচু হবে এ ব্যাপারে কোন পরিকল্পনা কারো কাছে নেই। ফলে লোকজন বাসাবাড়ি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কতটুকু উঁচু করে নির্মাণ করবে, কতটুকু উঁচু হলে ৫০ বছর পর সড়কের নিচে পড়ে যাবে না তা বুঝতে পারছে না।"
এ ব্যাপারে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুর প্রকৌশল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোস্তাবুর রহমান বলেন, "সড়ক নির্মাণ বা সংস্কারের সময় আশেপাশের বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের উচ্চতা অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিত। সড়ক যেন কিছুতেই এসবের উপরে না উঠে।"
তিনি বলেন, "নগরের প্রতিটি কাজ দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে করা উচিত। না হলে ভালো উদ্দেশ্যে করা কাজও মানুষের ক্ষতির কারণ হয়ে যেতে পারে। এজন্য সড়ক উঁচু করার মতো বড় কাজের আগে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়া উচিত। কিন্তু সিলেটে সাধারণত তেমনটি করা হয় না।"
ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ড্রেনেজ ব্যবস্থাও
অপরিকল্পিতভাবে সড়ক উঁচু হওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সিলেটের ড্রেনেজ ব্যবস্থাও। এমনটি জানিয়ে সিলেটের প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার মিঠু তালুকদার বলেন, "সড়ক উঁচু হওয়ার সাথে সাথে ড্রেনও উঁচু হয়ে যাচ্ছে। ফলে এই ড্রেন দিয়ে নিচু বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পানি নামতে পারছে না। একারণে এখন ঘনঘন জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে।"
এমনটি জানালেন নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. জহির বিন আলমও। তিনি বলেন, "এভাবে সড়ক উঁচু হতে থাকলে ড্রেনেজ সিস্টেম ধ্বংস হয়ে যাবে। কারণ সিলেট নগর প্রাকৃতিকভাবেই উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে কিছুটা ঢালু। ফলে বৃষ্টি হলে উত্তর দিক থেকে পানি গড়িয়ে দক্ষিণের সুরমা নদীতে গিয়ে পড়ে। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে সড়ক উঁচু করতে থাকলে প্রাকৃতিক এই ভারসাম্যটা নষ্ট হয়ে যাবে। তখন কিছুদিন পরপর ড্রেনেজ সিস্টেম বদলাতে হবে।"
সংস্কারের নামে কিংবা জলাবদ্ধতা নিরসনে সড়ক উঁচু করায় নাগরিকদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি ভাবাচ্ছে নগর কর্তৃপক্ষকেও।
এ প্রসঙ্গে সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, "ইদানীং আমরা কিছু সড়ক খুঁড়ে তারপর সংস্কার করছি। রাস্তা আর উঁচু করছি না। বন্দরবাজার- চৌহাট্টা সড়কও এসকেভেটর দিয়ে খুঁড়ে সবকিছু ফেলে সংস্কার করেছি।"
অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম বলেন, "সড়ক উঁচু হয়ে যাওয়ায় দেশের সব নগরের জন্যই একটি বড় সমস্যা। তবে বৃষ্টি ও বন্যাপ্রবণ হওয়ায় সিলেটে এই সমস্যাটি বেশি। তবে আমাদেরকে এর বিকল্প ভাবতে হবে। সড়ক উঁচু হওয়ার ফলে নিচু বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যে দুর্ভোগ ও ক্ষতি হচ্ছে তা একেবারে কম নয়। সড়ক খুঁড়ে সংস্কারের ক্ষেত্রে যে টাকা বাঁচানো হচ্ছে, উঁচু করে তারচেয়ে বেশি ক্ষতি করে ফেলা হচ্ছে কি-না তাও ভাবতে হবে। আর সড়ক যদি বৈজ্ঞানিকভাবে সংস্কার করা হয় তবে অবশ্যই মাটি খুঁড়ে আগের মালামাল সরিয়ে ফেলতে হবে।"