ধন্যবাদ প্রস্তাবে সরকারদলীয় সদস্যরা সর্বোচ্চ সময় ব্যয় করেছে প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের প্রশংসায়
একাদশ জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারদলীয় সদস্যরা তাদের বক্তব্যের সর্বোচ্চ সময় ব্যয় করেছে প্রধানমন্ত্রীর এবং সরকারের বিভিন্ন অর্জনের প্রশংসায়।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব আলোচনায় মোট ব্যয়িত সময় ১৮৬ ঘন্টা ২৬ মিনিট, যা সংসদ কার্যক্রমের মোট ব্যয়িত সময়ের ২৫ শতাংশ। সরকারদলীয় সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর এবং সরকারের প্রশংসায় ব্যয় করেছেন যথাক্রমে মোট সময়ের ১৯.৮ শতাংশ ও ১৯.৪ শতাংশ।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) 'পার্লামেন্ট ওয়াচ' প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। রোববার (১ অক্টোবর) রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
টিআইবি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৮৬ ঘন্টা ২৬ মিনিটের ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনার মধ্যে সরকারি দলের সদস্যদের মোট ব্যয়িত সময় মোট ১৫৬.২৮ ঘন্টা (৮৬.২%); প্রধান বিরোধী দলের ব্যয়িত সময় ২০ ঘন্টা ১৮ মিনিট (১১.২%) এবং অন্যান্য বিরোধী দলের ব্যয়িত সময় ৪ ঘন্টা ৪৮ মিনিট (২.৬%)।
তবে শুধু ক্ষমতাসীন দলের সদস্য না। সরকারের প্রসংশায় সময় ব্যয় করেছে বিরোধী দলের সদস্যরাও।
টিআইবির তথ্য বলছে, প্রধান বিরোধী দলের সদস্যদের বক্তব্য সরকারের বিভিন্ন অর্জন এবং প্রধানমন্ত্রীর গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসায় ব্যয়িত হয় ১১.৯ শতাংশ সময়।
এছাড়া তাদের মোট ব্যয়িত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ সময় ( ৪৪.৪%) ব্যয় হয়েছে দেশের চলমান অবস্থা পর্যালোচনা এবং সরকারের জন্য বিভিন্ন প্রস্তবনা প্রদানে।পাশাপাশি সরকার ও অন্য দলের সমালোচনায় ব্যয়িত হয় ১১.৬ শতাংশ সময়।
অন্যদিকে অন্যান্য বিরোধী দলের সদস্যরা মোট ব্যয়িত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ সময় ব্যয় করেছে সরকারের সমালোচনায় (৫৮.৬%)। এছাড়া বিভিন্ন দাবি দাওয়া ও প্রস্তাবনায় ব্যয় হয় ২৫.৩ শতাংশ সময়।
অবাক করার বিষয় রাষ্ট্রপতির যেসব ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব আনা হয়, সে ভাষণেও সরকারের অর্জন বিষয়ক আলোচনাই মূলত প্রাধান্য পেয়েছে।
টিআইবির প্রতিবেদন বলছে, বছরের প্রারম্ভিক ৫টি অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণ পাঠে ব্যয় হয় ৪ ঘন্টা ৫৭ মিনিট, যা সংসদ কার্যক্রমের মোট ব্যয়িত সময়ের ০.৭%। রাষ্ট্রপতির ভাষণে সরকারের অর্জন বিষয়ক আলোচনাতেই প্রায় চার-পঞ্চমাংশ সময় ব্যয়িত হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির এইসব আলোচনায় ভবিষ্যত পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনার বিষয় তেমনভাবে গুরুত্ব পায়নি।