সফল অস্ত্রোপচারে পেট–বুক আলাদা করার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরল ২ শিশু
গত ২০ সেপ্টেম্বর বুধবার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সফলভাবে আলাদা করা হয়েছিল পেট ও বুক জোড়া লাগানো দুই শিশু আবু বকর ও ওমর ফারুককে। আজ আরেক বুধবার (৪ অক্টোবর) তারা সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) এ দুই শিশুর সফল অস্ত্রোপচার হয়। তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে সংবাদ সম্মেলন ও বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দুই শিশুর বাড়ি ফেরা উদযাপন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ ওমর ফারুক ও আবু বকরের মা-বাবার হাতে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া শিশুদ্বয়ের চিকিৎসাসহায়তার অর্থের চেক হস্তান্তর করেন। এছাড়া এ সময় ছাড়পত্র ও উপহারসামগ্রীও তুলে দেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু সার্জারি বিভাগে এর আগেও অনেক জটিল ও কঠিন অপারেশন করা হয়েছে। এ হাসপাতালে সব ধরনের জটিল-কঠিন রোগের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।'
'আমরা দেশে প্রথমবারের মতো স্বল্প খরচে সফলভাবে লিভার প্রতিস্থাপন, ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট করেছি। সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে প্রতি সপ্তাহে দুটি করে কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হচ্ছে,' বলেন ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
উপাচার্য আরও বলেন, আমাদের দেশের সার্জনেরা এ ধরনের জটিল রোগের চিকিৎসা করতে সক্ষম এবং এ রকম জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই।
বিএসএমএমইউ-তে বর্তমানে এ ধরনের আরও একটি জোড়াদেহের কেস রয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, খুব শীঘ্রই তাদের অপারেশ করা হবে।
বিএসএমএমইউ-এর শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সুশংকর কুমার মন্ডলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমানসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিনেরা উপস্থিত ছিলেন।
গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার বাসিন্দা চায়না বেগম এবং তার স্বামী আল আমিন শেখের ঘরে গত ৪ জুলাই এ দুই শিশুর জন্ম হয়।
জন্মগ্রহণের পর শারিরীক জটিলতা দেখা দিলে ৫ জুলাই তাদেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ. কে. এম. জাহিদ হোসেনের অধীনে ভর্তি করানো হয়।
এরপর ২০ সেপ্টেম্বর সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ৭৮ দিন বয়সি আবু বকর ও ওমর ফারুককে আলাদা করেন চিকিৎসকেরা।
উল্লেখ্য, এর আগে এ বছরের ৩০ আগস্ট বিএসএমএমইউতে জোড়াশিশু নুহা ও নাবার পৃথকীকরণের দ্বিতীয় ধাপের অস্ত্রোপচার সফলভাবে করা হয়। বর্তমানে নুহা–নাবা পরবর্তী ধাপের অস্ত্রোপচারের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।