সিলেটে শুরুতেই আচরণবিধি ভাঙার হিড়িক
সিলেটে নির্বাচনী প্রচার শুরুর আগেই আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক পড়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিনে আচরণবিধি ভেঙে শোডাউন করেন প্রার্থীরা। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের পাশাপাশি পিছিয়ে নেই জাতীয় পার্টি (জাপা) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও। বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে মিছিল করে এসে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়ন জমা দেন তারা।
যদিও জাতীয় সংসদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালা অনুসারে, প্রার্থীরা মনোনয়পত্র দাখিলের সময় কোনো ধরনের মিছিল বা শোডাউন করতে পারবেন না।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল আহসানের কার্যালয়ে মনোনয়পত্র জমা দিতে ভিড় করেন প্রার্থীরা। সকালেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন সিলেট-২ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী এবং সিলেট-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ।
বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে মনোনয়পত্র জমা দিতে আসেন শফিকুর রহমান চৌধুরী। এ সময় শফিকুর রহমানের সমর্থকদের নৌকা মার্কার সমর্থনে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে স্লোগান দিতে দেখা যায়। শফিকুর রহমান এবং মাসুক উদ্দিনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের অনন্ত ২০ জন নেতা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ঢোকেন।
দুপুরে মিছিল নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন সিলেট-৩ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব। শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে রিটার্নি কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে শো ডাউন করেন তিনি।
তবে শোডাউন দেওয়ার কথা অস্বীকার করে হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, 'আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আগেই এখানে জড়ো হয়েছিলেন। আমি মাত্র ৪-৫ জন নেতা নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। বাকি যারা এসেছেন তাদেরকে আমি নিয়ে আসিনি।'
শোডাউন করে মনোনয়নপত্র জমা দেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদও। তিনি সিলেট-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। দুপুরে রিটার্নি কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমাদানকালে তার সঙ্গে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পদধারী অন্তত অর্ধশতাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এবং সিলেট-৬ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরুল ইসলাম নাহিদও বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
সিলেট-২ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া মনোনয়পত্র জমা দেন দুপুরে। তিনিও শতাধিক নেতাকর্মীসহ মিছিল নিয়ে এসে মনোনয়ত্র জমা দেন।
এ ব্যাপারে ইয়াহইয়া চৌধুরী বলেন, 'আমি কোনো শোডাউন নিয়ে আসিনি। আমাকে দেখে কর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে জড়ো হয়ে কিছু স্লোগান দিয়েছেন। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে কয়েকজন নেতা নিয়েই আমি প্রবেশ করি।'
সিলেট-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। দুপুরে তিনি শোডাউন করে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন।
তবে শোডাউন করার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, 'আমি নির্বানিী আচরণবিধির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আচরণবিধি মেনেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি।'
বিকেলে মনোনয়নপত্র জমা দেন সিলেট-৬ আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ও দলটির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী। তিনি ৪-৫ জন নেতাকর্মী নিয়েই মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এ ব্যাপারে সিলেটের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল আহসান বলেন, 'আমি সকাল থেকেই মনোনয়নপত্র জমা নিতে ব্যস্ত। এখানে কেউ শোডাউন করেননি। তবে বাইরে কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন কি না, তা খেয়াল করিনি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।