শুনানির দ্বিতীয় দিনে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন ৫১ জন
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের (প্রার্থিতা বৈধ বা বাতিল) বিরুদ্ধে করা আপিলের ওপর আজ দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে ৫১ জন তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
শুনানিতে মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতির আগ পর্যন্ত মোট ৫৯ জনের মধ্যে ২৮ জন প্রার্থিতা ফিরে পান, পরে আরও ২৩ জনের প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া, প্রার্থিতা ফিরে পাননি ৪১ জন। আরও ৭ জনের আপিলের সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। এনিয়ে দুদিনে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন ১০৭ জন। এর আগে শুনানির প্রথমদিন রোববার ৫৬ জন প্রার্থিতা ফিরে পান।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আইন শাখার দেওয়ার তথ্য অনুযায়ী আজকে যারা প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন- চট্টগ্রাম-১০ আসনের স্বতন্ত্র ফরিদ মাহমুদ; ঢাকা-১৪ আসনের তৃণমূল বিএনপির মো. নাজমুল ইসলাম; ময়মনসিংহ-১১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ; কুষ্টিয়া-৪ আসনের স্বতন্ত্র আব্দুর রউফ; মুন্সিগঞ্জ-২ আসনের সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের নূরে আলম সিদ্দিক; রংপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র মোছা. সুমনা আক্তার; ঢাকা-৫ আসনের সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের নুরুল আমিন; বাগেরহাট-২ আসনে জাতীয় পার্টির হাজরা সহীদুল ইসলাম এবং গাইবান্ধা-২ আসনের স্বতন্ত্র মোছা. মাছুমা আখতার তাঁদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।
এ ছাড়াও কুমিল্লা-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আবদুল মজিদ; ঢাকা-১৯ আসনের বিএসপি'র মো. জুলহাস; ঢাকা-১২ আসনের বিএনএফ'র মো. আতিকুর রহমান নাজিম; রাজবাড়ী-২ আসনে তৃণমূল বিএনপির এসএম ফজলুল হক; নোয়াখালী-১ আসনে স্বতন্ত্রী প্রার্থী খন্দকার আর আমিন; বাগেরহাট-২ আসনে তৃণমূল বিএনপি মরিয়ম সুলতানা; জামালপুর-৪ আসনে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের তারিক মাহদী; ঢাকা-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারহানা সাঈদ; বাগেরহাট-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম আজমল ও বাগেরহাট-৪ আসনের স্বতন্ত্র মো. জামিল হোসেনও প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।
এদিকে, ঠাকুরগাঁও-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা আক্তার মোল্লা ও কক্সবাজার-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সোহেল আহমেদের প্রার্থিতা বাতিল বহাল রেখেছে নির্বাচন কমিশন।
প্রার্থীদেরকে তাদের আইনী প্রতিনিধি এবং নিজেদের পক্ষে প্রয়োজনীয় নথিপত্র নিয়ে এই শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে হচ্ছে।
এর আগে ৫-৯ তারিখ পর্যন্ত ইসিতে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ৫৬১টি আপিল জমা পড়েছিল। আর ১০ থেকে এই আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করছে নির্বাচন কমিশন যা চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এই শুনানির সিদ্ধান্তে প্রার্থীরা সন্তুষ্ট না হলে, তারা হাইকোর্টের মাধ্যমেও পুনর্বিবেচনার সুযোগ পাবেন।
গতকাল শুনানির প্রথম দিনে ৯৪টি আপিলের শুনানি করে ইসি। এরমধ্যে মনোনয়নপত্র প্রাথমিকভাবে বাতিল হওয়া ৫৬ জন তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন ভবনে আপিল পর্যালোচনার পর এ রায় দেয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন।
গতকাল যারা প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন– মাহী বি চৌধুরী, হিরো আলম, ডলি সায়ন্তিনী ও নাসিরুল ইসলাম খান।
ঋণ খেলাপির অভিযোগে মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রার্থী মাহী বি চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিল।
ক্রেডিট কার্ডের ঋণ খেলাপি হওয়ার অভিযোগে পাবনা-২ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রার্থী সংগীতশিল্পী ডলি সায়ন্তনীর প্রার্থিতাও বাতিল করা হয়।
ভুলভাবে মনোনয়নপত্র দাখিলের অভিযোগে প্রার্থিতা বাতিল হয়েছিল বগুড়া-৪ আসনের হিরো আলমের।
এছাড়া, মামলার তথ্য গোপনের অভিযোগে কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খানের মনোনয়নও বাতিল করা হয়।
আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
৩০০ সংসদীয় আসনের বিপরীতে মোট ২ হাজার ৭১৬টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে।
যাচাই-বাছাইকালে ৭৩১টি মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কাছে মোট ৫৫৮টি আবেদন জমা পড়ে।