ভোটার আনতে আওয়ামী লীগের সর্বাত্মক প্রস্তুতি
৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন সর্বোচ্চ ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। একইসাথে নির্বাচন প্রতিহত করতে এদিন বিএপি-জামায়াতের হরতাল ও সম্ভাব্য অরাজক পরিস্থিতি মোকাবিলা করে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ নিশ্চিতের প্রস্তুতিও নিয়েছে দলটি।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানিয়েছেন, এবারের নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিদেশিরা নানা ধরনের সমালোচনা করছে। আর সেই সমালোচনার যথাযথ উত্তর দিতেই আওয়ামী লীগ 'ভোটার টার্নওভারের' ওপর বেশি জোর দিয়েছে। এ নির্বাচন যাতে অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য হয়, সেই পরিকল্পনা নিয়েছে দল।
তারা জানান, দেশের ৪২ হাজার ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো এবং নৌকার প্রচারের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য ইউনিটভিত্তিক কমিটি গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। প্রত্যেক কমিটিতে সদস্য আছেন ৩০০ জন তৃণমূল নেতা।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, এই কমিটিগুলো ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখা এবং ভোটারদেরকে ভোটকেন্দ্রে আসতে নানাভাবে উৎসাহ দেবে। একইসাথে ভোট বানচালে বিরোধীদের যেকোনো প্রচেষ্টারও মোকাবিলা করবে এই কমিটিগুলো।
শুক্রবার রাজধানীতে আওয়ামী লীগের এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ভোটারদের প্রতি সকাল সকাল ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে ও অন্যকে ভোট দিতে উৎসাহিত করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, কেন্দ্রে ভোটার আনার জন্য বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেই। 'ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা, কেন্দ্রে আনা—এটার জন্য নেতাকর্মীদের টিম আছে। তারা সে কাজ করবে। বেশিরভাগ ভোটার স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসবে।'
এদিকে নির্বাচন প্রতিহত করতে ভোট বর্জনের ডাক দিয়ে বিএনপি-জামায়তসহ কয়েকটি দল শনিবার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত হরতালের ডাক দিয়েছে।
নির্বাচনের দিন বিএনপির হরতাল প্রসঙ্গে কাদের বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে হরতাল এখন অকেজো হাতিয়ার। হরতাল-অবরোধ এখন শুধু বিএনপির কর্মসূচিতেই রয়ে গেছে, বাস্তবে নেই।
নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের সমালোচনা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আমাদের বিদেশি বন্ধুরা বাংলাদেশে পশ্চিমাদের মানসম্মত গণতন্ত্র দেখতে চান। সেসব দেশে কি কোনো রাজনৈতিক দল হরতাল দেয়? তাহলে তো যারা নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে চায় তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ হওয়া উচিত।'
ওবায়দুল কাদের জানান, নির্বাচন পর্যবেক্ষণে প্রায় ২০০ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক বাংলাদেশে আসছেন। ইইউ প্রতিনিধি দল আগে থেকেই দেশে আছে। যুক্তরাষ্ট্রের আইআরআই ও এনডিআই-এর প্রতিনিধিরাও দেশে অবস্থান করছেন। তাই সার্বিক বিবেচনায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন কাদের।