সংলাপের মাধ্যমে যেকোনো রাজনৈতিক সংকটের নিরসন সম্ভব: সিইসি
আগামীকালই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট শুরু হতে যাচ্ছে। আজ শনিবার (৬ জানুয়ারি) তাঁর নির্বাচনপূর্ব শেষ ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, তিনি এখনো 'সংলাপের' মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকট নিরসনের সম্ভাবনা দেখছেন।
নির্বাচনের সব প্রস্তুতি শেষে জনগণের প্রতি ভোট দিতে আসার আহ্বান জানিয়ে সিইসি এসময় হুঁশিয়ার দিয়ে বলেছেন, নির্বাচনে অনিয়ম হলে প্রয়োজনে কেন্দ্র বা নির্বাচনী এলাকার ভোটগ্রহণ সামগ্রিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, কোনো প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে জাল ভোট, ভোট কারচুপি, ব্যালট ছিনতাই, অর্থের লেনদেন ও পেশিশক্তির সম্ভাব্য ব্যবহার কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রার্থিতা তাৎক্ষণিক বাতিল করা হবে। প্রয়োজনে কেন্দ্র বা নির্বাচনী এলাকার ভোটগ্রহণ সামগ্রিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে। জনগণকেও ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল প্রকারের নির্বাচনী অনিয়ম-অনাচার প্রতিহত করার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন সিইসি। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সিইসির ভাষণ সম্প্রচার করা হয়।
সিইসি হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আমরা বিশ্বাস করি আলাপ-আলোচনা ও গঠনমূলক সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতায় পৌঁছে, যেকোনো রাজনৈতিক সংকটের নিরসন সম্ভব। নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলো সহিংসপন্থা পরিহার করে– কেবল শান্তিপূর্ণ পন্থায় জনগণকে নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানাবে বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। এতে জনমনে আস্থা সঞ্চারিত হয়েছিল ।
তিনি বলেন, (কিন্তু) ঘোষিত হরতাল অবরোধের মধ্যে সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনা দেখা যাচ্ছে। ট্রেন, যানবাহন, নির্বাচন কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এসবের পেছনে কারা দায়ী– সেটি আমাদের বিবেচ্য নয়। তবে নাশকতা ও সহিংসতার কতিপয় সাম্প্রতিক ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। তারপরও অলঙ্ঘনীয় সাংবিধানিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে জনগণকে অনুরোধ করছি, আপনারা সকল উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও অস্বস্তি পরাভূত করে ভোটকেন্দ্রে এসে অবাধে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে মূল্যবান নাগরিক দায়িত্ব পালন করবেন।
সিইসি আরও বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য কাঙ্ক্ষিত অনুকূল রাজনৈতিক পরিবেশ প্রয়োজন। কিন্তু অনস্বীকার্য যে, নির্বাচন প্রশ্নে রাজনৈতিক নেতৃত্বে মতভেদ রয়েছে। মতভেদ থেকে সংঘাত ও সহিংসতা কাম্য নয়। কিন্তু, পরিতাপের বিষয়– নাশকতা ও সহিংসতা একেবারেই হচ্ছে না, তা বলা যাচ্ছে না । রাষ্ট্রীয় ধন-সম্পদের ক্ষতিসাধনের পাশাপাশি মানুষ আহত-নিহত হচ্ছে। নিষ্পাপ শিশু, নারী, পুরুষের মর্মান্তিক ও মর্মন্তুদ মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। চলমান এহেন পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধান ও অবসান প্রয়োজন । রাজনৈতিক নেতৃত্বকে এ বিষয়ে আন্তরিকভাবে উদ্যোগী হতে হবে। আজকে না হলেও ভবিষ্যতের জন্য।