আশঙ্কা করছি আমাদেরকে ভোটে এনে কোরবানি দেওয়া হয় কি না: জি এম কাদের
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, 'আমরা আশঙ্কা করছি, আমাদেরকে ভোটে নিয়ে এসে শেষ পর্যন্ত কোরবানি দিয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করা হয় কি না। এটা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। সবসময়ই আমাদের আশঙ্কা ছিল যে, নির্বাচনে এনে আমাদের কোরবানি দেওয়া হয় কি না।
রোববার (৭ জানুয়ারি) রংপুর-৩ আসনের ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণের সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি কাদের এ মন্তব্য করেন। রংপুর -৩ আসনে ভোট করছেন জিএম কাদের।
এ পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমরা যেহেতু ইলেকশনে এসেই গেছি, এখন তো আর বর্জন করার কোনো স্কোপ নেই। ইলেকশনের পরে ফলাফল দেখে পরবর্তী কর্মসূচি নিতে হবে।'
সরকার দলীয় লোকজন ভোট ডাকাতির নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে জিএম কাদের আরও বলেন, 'জামালপুর-কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জায়গায় আমাদের এজেন্টদের বের করে দেয়া হচ্ছে বলে খবর পেয়েছি। পুরোনো কায়দায় আওয়ামী লীগ ভোটকেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতির নির্বাচন করে, এবারও সেটাই করা হচ্ছে। যদিও আমাদের বারবার আশ্বস্ত করা হয়েছিল এমন কোনো ঘটনা ঘটবে না।'
জিএম কাদের বলেন, 'ইতিমধ্যে সকাল থেকে আমি তিনটা ঘটনা আমি জেনেছি যে ভোট ডাকাতির নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ভোটটা স্বাভাবিক হবে না, সেই ধরনের একটা আবহ তৈরি করা হচ্ছে সেইসব জায়গায়। তবে সব জায়গার খবর এখনও পাইনি।'
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আশা করছিলাম ভোটটা স্বাভাবিক হবে। কিন্তু রংপুর ছাড়া বেশিরভাগ জায়গায় ভোট স্বাভাবিক হচ্ছে না।
২০১৮ সালের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, \এখন পর্যন্ত কিছু কিছু নমুনা দেখা যাচ্ছে। কারণ তাদের লোকবল বেশি। প্রশাসন তাদের সঙ্গে পরোক্ষভাবে আছে। অনেক জায়গায় কোথাও বাধা দিচ্ছে না, চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। এরকম তারা করে যাচ্ছে। যতদূর খবর পেয়েছি এতে আমরা উদ্বিগ্ন।'
দিনশেষে জাতীয় পার্টির আশঙ্কা যদি সত্যি হয়, তাহলে দলের অবস্থান কি হবে, এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেটা যখন হবে তখন বলল। আগে থেকে কিছু বলতে চাই না। আমরা সার্বিক পরিস্থিতি দেখে দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।
এ সময় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগরের সভাপতি সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসীর, জেলা কমিটির সদস্য সচিব হাজী আব্দুর রাজ্জাকসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রংপুর-৩ আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের দলীয় প্রতীক লাঙ্গল, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির আব্দুর রহমান রেজু একতারা, বাংলাদেশ কংগ্রেসের একরামুল হক ডাব, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সহিদুল ইসলাম মশাল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শফিউল আলম আম এবং তৃতীয় লিঙ্গের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারা ইসলাম রানী ঈগল প্রতীকে লড়ছেন।
এই আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তুষার কান্তি মন্ডলকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
এখানে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৭৬৮ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৪৭ হাজার ২৯৪ জন ও পুরুষ ২ লাখ ৪৭ হাজার ৪৭২ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ২ জন।