অর্থমন্ত্রীর জন্য সামনে অপেক্ষা করছে কঠিন বাস্তবতা
বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশ বিশ্বে একটি গতিশীল এবং দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনৈতিক শক্তি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। আওয়ামী লীগের ২০২৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে দাবি করা হয়েছে, কৃষি, শিল্প এবং পরিষেবা খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের ফলে জাতীয় আয়ের দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে ৩৩তম অবস্থানে আছে।
ইশতেহারের "স্মার্ট বাংলাদেশ: যেখানে উন্নয়ন কর্মসংস্থানকে ত্বরান্বিত করে" অংশে বলা হয়, জ্বালানি, বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নতি দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। সেখানে বলা হয়, ২০২৭-২৮ অর্থবছরে দেশের জিডিপি বৃদ্ধি পেয়ে ৮.১ শতাংশ হবে যেখানে ২০২৩ অর্থবছরে দেশের মোট জিডিপি ছিল ৬ শতাংশ।
ইশতেহারে সর্বস্তরে ঘুষ ও দুর্নীতি নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ঋণ ও কর ফাঁকিদাতা এবং দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের বিচার করে তাদের অবৈধ অর্থ ও সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে। নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়েছিল, "আমরা ক্রমাগত খেলাপি ঋণ পুনঃনির্ধারণ করে ঋণ গ্রহণের সুযোগ নিয়ন্ত্রণ করবো।"
নতুন অর্থমন্ত্রীকে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অর্থনীতির উন্নতি সাধনের জন্য অর্থ পাচার প্রতিরোধ এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। তার জন্য অর্থমন্ত্রীকে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে।
খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারের জন্য আইনের প্রয়োগ করা, বৈদেশিক মুদ্রার পর্যাপ্ত রিজার্ভ বজায় রাখা, বাস্তবিক কার্যকরী বিনিময় হার (আরইইআর) এবং নামমাত্র বিনিময় হারের (এনইআর) মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা, ব্যাংক ও আর্থিক খাতে সংস্কার করা- এই কথাগুলো একজন অর্থমন্ত্রীর জন্য বলা সহজ হলেও বাস্তবে এগুলো করা সবসময় কঠিন কাজ।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য সঞ্চয়, বিনিয়োগ ও রাজস্ব বৃদ্ধি করা, প্রকল্প ব্যয় ও সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের পদ্ধতি সহজ করতেও অর্থমন্ত্রীকে হিমশিম খেতে হবে।
নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর করেন। তিনি ১৯৬৬ সালে ফরেন সার্ভিসে যোগদানের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই বছর শিক্ষকতা করেছিলেন।
তিনি ২০০১ সালে চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তিনি ২০১২ সালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী এবং ২০১৪ সালে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।