যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠা নাদির জুনাইদকে ৩ মাসের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠাল ঢাবি
এবার শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক নাদির জুনাইদকে ৩ মাসের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বিভাগের করিডোরে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত পড়ে শোনান বিভাগের চেয়ারম্যান আবুল মনসুর আহাম্মদ।
তিনি পড়ে শোনান, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে আপনাকে সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য আজ থেকে তিন মাসের জন্য ছুটি দেওয়া হলো৷'
এতে আরও বলা হয়, 'আপনার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের যথাযথ অনুসন্ধান ও তদন্ত করার জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপন করা হবে এবং সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এর আগে, তার বিচার চেয়ে সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দ্বিতীয় দিনের মতো ক্লাস বর্জন করে সকাল ১০টা থেকে বিভাগের করিডোরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।
দুপুর সোয়া ২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করে উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দিতে চান তারা।
উপাচার্য তখন কার্যালয়ে উপস্থিত না থাকায় তারা মিছিল করে তার বাসভবনে যান। সেখানে বিভাগের চেয়ারপারসন আবুল মনসুর আহাম্মদ তাদের বিকাল ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, উপাচার্য বিদেশি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে আছেন।
আবুল মনসুর আহাম্মদ বলেন, 'বিকাল ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। উপাচার্য মহোদয় আপনাদের দাবির বিষয়ে লিখিত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন বলে নিশ্চিত করেছেন।'
উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার আগে বিক্ষোভের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা অধ্যাপকের অফিস ও বিভাগের শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
এর আগে শনিবার সকালে ঢাবি'র গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও দীর্ঘদিন ধরে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ করেন এক শিক্ষার্থী।
প্রক্টর মো. মাকসুদুর রহমানের কাছে দাখিল করা অভিযোগে ওই ছাত্রী তার প্রেমের প্রস্তাব গ্রহণ না করায় তাকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া, সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে তাকে নজরদারি করা, অসময়ে বার বার ফোন করা, যৌন আগ্রহ প্রকাশ করাসহ নানা অভিযোগ আনেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার রাতে সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে।
এছাড়া, শিক্ষার্থীরা অধ্যাপক নাদিরকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।
সোমবার বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক আবুল মনসুর আহাম্মদের কাছে জমা দেওয়া স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা তিনটি মূল বিষয় তুলে ধরেন- অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তদন্তে জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন; যৌন নিগ্রহকারীদের জন্য দ্রুত শাস্তির বিধান এবং তদন্ত চলাকালীন সময়ে ওই শিক্ষককে সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা।