মিয়ানমারে সংঘর্ষ: ওপার থেকে থেমে থেমে এখনও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে
মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের এলাকাগুলো থেকে আজ মঙ্গলবারেও থেমে থেমে বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে, রাখাইন রাজ্যের জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সঙ্গে দেশটির সরকারি বাহিনীর লড়াই চলছেই।
এদিকে সংঘর্ষের জেরে অন্যত্র আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা বাড়ি ফিরতে শুরু করলেও তাদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কাটছে না। কখন ওপার থেকে গুলি বা মর্টার শেল এসে পড়ে এই আতঙ্ক তাদের।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দিনভর হোয়াইক্যংয়ের লম্বাবিল ও উনচিপ্রাং সীমান্তের নাফ নদীর ওপারে থেমে থেমে এবং মধ্যরাতে ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি সীমান্তে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। মঙ্গলবার ভোর ৪টা থেকে সকাল ১১টা পর্যন্তও ওপারে বিকট শব্দের বিস্ফোরণ শোনা গেছে।
তারা বলছেন, কখনও বিস্ফোরণের বিকট শব্দ; কখনও সীমান্তের এপারে নিজ বসতঘরে গুলি ও মর্টার শেল এসে পড়ছে। এ নিয়ে তারা আতঙ্কে রয়েছেন। সেই সঙ্গে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা সরকারি বাহিনী কিংবা অস্ত্রধারী রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশও তাদের আতঙ্কের কারণ।
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রেজাউল করিম জানান, টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের নাফ নদীর ওপারে ভোর থেকে সকাল ৭টা প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে।
রাখাইনে টানা ১৫ দিনের এই অস্থিরতার কারণে উদ্বেগ জানিয়ে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জালাল আহমদ বলেন, এলাকাবাসীর মনে যেন স্বস্তি নেই। থেমে থেমেই গোলাগুলি আর বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, 'উদ্বেগ বা ভয়ের কারণ হলো না জানি কখন এপারে গুলি বা মর্টার শেল এসে পড়ে। তিনি সীমান্ত এলাকার মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারি জানান, নাফ নদীর ওপারে বিস্ফোরণের শব্দ সোমবারের তুলনায় মঙ্গলবার ভোর থেকে বেড়েছে। এতে এপারে গুলি-মর্টার শেল এসে পড়ার আশঙ্কার পাশাপাশি রোহিঙ্গাসহ অন্যান্যদের অনুপ্রবেশের ঝুঁকি বেড়েছে।
ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের ঢেঁকিবনিয়া এলাকা থেকে কখনও কালো ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে, আবার কখনও গুলি বা মর্টার শেলের শব্দ শোনা যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানোসহ সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ।
তিনি বলেন, 'নাফ নদী অতিক্রম করে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের পাশাপাশি কোনো দুষ্কৃতকারী যাতে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য অতিরিক্ত বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত অনুপ্রবেশের চেষ্টা করা ১৩৭ জনকে প্রতিহত করেছে বিজিবি।'