মামলা প্রত্যাহার করতে প্রাণনাশের হুমকি; ডিবি পুলিশের দ্বারস্থ শিশু আয়ানের বাবা
ইউনাইটেড হাসপাতালে অপচিকিৎসায় মারা যাওয়া শিশু আয়ান আহমেদের বাবা শামীম আহমেদকে ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলা তুলে নিতে অনবরত হত্যার হুমকি দিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে আগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করলেও এবার সরাসরি ডিবি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
মামলা তুলে নিতে হত্যার হুমকি পেয়ে গত ২৮ জানুয়ারি আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। কিন্তু জিডি করার পরও প্রাণনাশের অনবরত হুমকি ও মামলা তুলে নিতে চাপ আসতে থাকায় অভিযোগ নিয়ে তিনি ডিবি পুলিশের কাছে আসেন।
আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সোয়া ১টার দিকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে আসেন। জানা গেছে, ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেবেন তিনি।
এ বিষয়ে শামীম আহমেদ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে থানা পুলিশও আসামিদের গ্রেপ্তার করছে না। আসামিরা বহাল তবিয়তে অফিস করছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও তাদেরকে অব্যাহতিও দেয়নি। পুলিশও তাদেরকে ধরছে না।'
তিনি আরও বলেন, 'আমার তো হারানোর কিছু নেই। আমি চাই ছেলে হত্যার বিচারটা অন্তত হোক। কিন্তু হুমকি ও চাপের মধ্যেই আছে আমার পুরো পরিবার। এমন অবস্থায় আমি ডিবি কার্যালয়ে এসেছি। হারুন সাহেবের কাছে লিখিত অভিযোগ করব। ডিবিই আমাদের শেষ ভরসাস্থল। আশা করি আসামিদেরকে ডিবি গ্রেপ্তার করবে।'
এর আগে জিডিতে শামীম আহমেদ উল্লেখ করেন, রবিবার (২৮ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে তিনি ও তার মামা আবদুস সালাম কবীর সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন নং-২০১/২৪ এর শুনানিতে অংশ নেন। শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্ট থেকে বের হয়ে দুপুর আনুমানিক সোয়া ১২টার দিকে শাহবাগ থানার অধীন হাইকোর্টের মাজার গেট থেকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে হেঁটে আসার পথে ফুটপাতের ওপর পৌঁছালে ৬ থেকে ৭ জন ব্যক্তি বাড্ডা থানায় ডাক্তারদের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নিতে চাপ সৃষ্টি করেন। 'আমি যদি মামলা তুলে না নিই, তবে অফিসে যাওয়ার সময় আমার যেকোনো ধরনের ক্ষতি করবে বলে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রাণনাশের হুমকি দেন।'
গত ৮ জানুয়ারি রাজধানীর সাতারকুল বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে টানা ৭ দিন লাইফ সাপোর্টে থেকে শিশু আয়ান মারা যায়।
পরের দিন ৯ জানুয়ারি রাজধানীর বাড্ডা থানায় আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ বাদী হয়ে ইউনাইটেড হাসপাতাল ও ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুই চিকিৎসক, অজ্ঞাতনামা কর্মকর্তা-কর্মচারী ও একজন পরিচালককে আসামি করে মামলা করেন।