অফশোর বিডিংয়ে অনেক সুবিধা পাবে বলে বিদেশি কোম্পানিগুলো আগ্রহী হয়েছে: প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা
সরকার প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে অনেক বিদেশি কোম্পানি তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য অফশোর বিডিংয়ে আগ্রহ প্রকাশ করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী।
সোমবার (১১ মার্চ) পেট্রোবাংলা কার্যালয়ে অফশোর বিডিং নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'অংশগ্রহণকারী কোম্পানিগুলোকে সব ধরনের কর থেকে মুক্ত করে দেওয়া হবে।'
এবারের বিডিংয়ে কতগুলো আকর্ষণীয় দিক আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, 'এবার ব্রেন্ট ক্রুডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখা হয়েছে। ক্রুডের দাম বেড়ে গেলে কোম্পানিগুলো কিছুটা সুবিধা পাবে, আর দাম কমে গেলে আমরা সুবিধা পাব।'
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, 'আমরা চাচ্ছি বিশ্বের খ্যাতনামা কোম্পানিগুলো এতে অংশ নিক। প্রতিযোগিতামূলকভাবে কাজটি দিতে পারব। রমজানের পর প্রমোশনাল সেমিনার করা হবে, সেখানে বিদেশিরা অংশগ্রহণ করবে।'
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব নুরুল আলম বলেন, 'অনানুষ্ঠানিকভাবে আমরা ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। ইতিমধ্যে কিছু বহুজাতিক কোম্পানি সার্ভে ডাটা নিয়ে এসেছে।'
তিনি জানান, অফশোরের পাশাপাশি অনশোরেও আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
সাগরে বাপেক্সের ক্যারিড শেয়ার ১০ শতাংশ থাকবে বলে জানান তিনি।
পেট্রোবাংলা গতকাল (১০ মার্চ) বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ২৪টি ব্লকে আন্তর্জাতিক দরপত্র উন্মুক্ত করেছে। গভীর সমুদ্রে ১৫টি ও অগভীর সমুদ্রে ১১টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, নয়টি দেশীয় পত্রিকার পাশাপাশি বিদেশি পত্রিকা 'দি ইকোনমিস্ট'-এ নোটিশ প্রকাশের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। দরপত্র জমা দেওয়ার জন্য ৬ মাস (৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) সময় পাবে বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলো।
তেল পেলে ২০ এবং গ্যাস পেলে কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ২৫ বছর চুক্তি করা হবে বলে জানান তিনি।
জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, এটি বহুজাতিক কোম্পানির জন্য একটি আকর্ষণীয় প্রস্তাব এবং উভয়পক্ষের জন্যই লাভজনক হবে।
তবে দরপত্রে আগ্রহী বহুজাতিক কোম্পানির সংখ্যা প্রকাশ করেননি তিনি।
পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, অফশোর তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের সর্বশেষ দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল ২০১৬ সালে।
২০১৯ সালে নতুন উৎপাদন বণ্টন চুক্তি (পিএসসি) স্বাক্ষর হয়েছিল, কিন্তু বিডিং ডাকা হয়নি। প্রায় চার বছর পর গত জুলাইয়ে নতুন পিএসসি অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা।
পিএসসি-২০১৯ অনুসারে, গভীর সমুদ্রের জন্য প্রতি ১ হাজার ঘনফুট গ্যাসের মূল্য ৭.২৫ ডলার এবং অগভীর সমুদ্রের জন্য ৫.৫ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছিল।
তবে নতুন পিএসসির জন্য কোনো মূল্য নির্ধারণ করা হয়নি।
গ্যাসের দাম ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দামের ১০ শতাংশ ধরা হয়েছে।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে বা কমলে গ্যাসের দামও আনুপাতিক হারে বাড়বে বা কমবে।
বর্তমানে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার। সে অনুযায়ী বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তোলিত গ্যাসের দাম হবে ৮ ডলার।
তবে জ্বালানি তেলের দাম ১০০ ডলার হলে গ্যাসের দাম হবে ১০ ডলার।