দেশের বনজ সম্পদ, কার্বনের পরিমাণ নির্ধারণে দ্বিতীয় বারের মত জরিপ শুরু
দেশে দ্বিতীয় বারের মত শুরু হয়েছে বাংলাদেশ বন জরিপ (বিএফআই) কার্যক্রম। আজ মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকালে সুন্দরবনের পশ্চিম বন বিভাগের কালাবগি ফরেস্ট স্টেশনের আওতাধীন এলাকায় বনজ তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে এই কার্যক্রম শুরু হয়।
মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহে বন বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়োজিত সমন্বয়ক উপ-বন সংরক্ষক মো. জহির ইকবাল বলেন, "সংগৃহীত তথ্য বন ব্যবস্থাপনায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে।"
৩০ জনের একটি প্রতিনিধি দল আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় এ জরিপ কার্যক্রম চালাবে।
এর আগে, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকাতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী দ্বিতীয় বাংলাদেশ বন জরিপের উদ্বোধন করেছিলেন।
ওই দিন মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, দক্ষ বন ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা গড়ে তুলতে এবং বনজ সম্পদের টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য সরকার দ্বিতীয় বন জরিপ করছে।
মার্কিন সরকারের বেসামরিক বৈদেশিক সাহায্য প্রদানকারী সংস্থা (ইউএসএআইডি) এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এর কারিগরি সহযোগীতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বন বিভাগ।
বিশ্ব ব্যাংকের ২৫ কোটি টাকা ঋণে এই দ্বিতীয় বন জরিপ করা হচ্ছে। এর আগে, ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথম বন জরিপ করা হয়েছিল।
২০১৯ সালে প্রথম জরিপের ফলাফল প্রকাশ করেছিল বন বিভাগ। সেই তথ্য মতে, ওই জরিপে দেশের ৫টি বনাঞ্চলের ১,৮৫৮টি প্লটের মধ্যে ৩৯০টি বৃক্ষ প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। এরমধ্যে ৯ শতাংশ বৃক্ষ ছিল বিদেশি প্রজাতির।
জরিপের ফলাফলে আরও বলা হয়েছিল, সারাদেশে দেশের বন ও বনের বাইরে বৃক্ষ সম্পদের পরিমাণ ৩৮৪ মিলিয়ন ঘন মিটার। এরমধ্যে ৬৬ শতাংশ বন এলাকার বাইরে অবস্থিত। বনের বাইরে ৩৮৭ মিলিয়ন টন বায়োমাস রয়েছে।
এছাড়া, দেশের মাটির উপরের বৃক্ষ সম্পদ, মাটির নিচের বৃক্ষ সম্পদ এবং মাটির মধ্যে (৩০ সেন্টিমিটার গভিরতা পর্যন্ত) সঞ্চিত কার্বনের পরিমাণ রয়েছে ১২৭৬ মিলিয়ন টন। যার মধ্যে শতকরা ২২ শতাংশ কার্বনের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে। উল্লেখযোগ্য দুটি বনের মধ্যে, ১০ শতাংশ কার্বন রয়েছে পাহাড়ি বনে এবং সাড়ে ৫ শতাংশ রয়েছে সুন্দরবনে। বাকি কার্বন বন এলাকার বাইরে অবস্থিত।
ওই জরিপে বনের অর্থনৈতিক গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছিল। বলা হয়, মোট জাতীয় আয়ের (জিএনআই) ১ দশমিক ২৯ শতাংশ অবদান রাখে বন। ২০১৭-১৮ বছরের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) বৃক্ষ সম্পদের অর্থনৈতিক মূল্য ছিল ৩ দশমিক ১১ শতাংশ।