হাসপাতালগুলোকে হ্যালোথেনের পরিবর্তে নিরাপদ অ্যানেস্থেটিক ব্যবহারের নির্দেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
অ্যানেস্থেশিয়া-সংক্রান্ত দুর্ঘটনা রোধে সারা দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে ইনহেলেশনাল অ্যানেস্থেটিক হিসেবে হ্যালোথেনের পরিবর্তে আইসোফ্লুরেন বা সেভোফ্লুরেন ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
পাশাপাশি সারাদেশের সব সরকারি হাসপাতালে মোট হ্যালোথেন, আইসোফ্লুরেন ও সেভোফ্লুরেন ভেপোরাইজারের সংখ্যা নিরূপণ করে সেই তথ্য বিভাগীয় পরিচালকের (স্বাস্থ্য) মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখায় ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সব বেসরকারি হাসপাতালের হ্যালোথেন ভেপোরাইজার অনতিবিলম্বে পরিবর্তন করতে হবে।
১ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখা এক নোটিশের মাধ্যমে হাসপাতালগুলোকে এ নির্দেশনা দেয়।
নোটিশে বলা হয়, সরকারি হাসপাতালে বিদ্যমান হ্যালোথেন ভেপোরাইজার পরিবর্তন করে আইসোফ্লুরেন বা সেভোফ্লুরেন ভেপোরাইজার প্রতিস্থাপন করতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের প্রাক্কলন করতে হবে এবং চাহিদা মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া হ্যালোথেন ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবহার রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সারা দেশের সব অ্যানেস্থেশিওলজিস্টদের (সরকারি/বেসরকারি) নিয়ে হ্যালোথেনের পরিবর্তে আইসোফ্লুরেন ও সেভোফ্লুরেন ব্যবহার-সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রতিপালনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
নতুন অ্যানেস্থেশিয়া মেশিন কেনার ক্ষেত্রে স্পেসিফিকেশন নির্ধারণে স্পষ্টভাবে আইসোফ্লুরেন বা সেভোফ্লুরেন ভেপোরাইজার এর অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে বলেও নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়।
গত কয়েক মাসে দেশের কয়েকটি স্থানে বিভিন্ন চিকিৎসা-প্রক্রিয়া চলাকালীন অ্যানেস্থেশিয়া ব্যবহারের পর বেশ কয়েকটি মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর এই নোটিশ জারি করা হলো।
চিকিৎসকরা বলছেন, বেশ কয়েকটি কারণে এ ধরনের ঘটনা বেড়েছে। কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে সাধারণ অ্যানেস্থেটিক হ্যালোথেন উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া এবং বাজারে নকল হ্যালোথেন বিক্রি।
অস্ত্রোপচারের সময় অ্যানেস্থেশিয়ার জন্য ব্যবহৃত সাশ্রয়ী ওষুধ হ্যালোথেন। এর ক্ষতিকারক শারীরিক এবং পরিবেশগত প্রভাবের কারণে মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) এটি নিষিদ্ধ করেছে।
এসিআই ফার্মাসিউটিক্যালস হ্যালোসিন ব্র্যান্ড নামে হ্যালোথেন উৎপাদন করত। প্রতিষ্ঠানটি গত বছর বাংলাদেশে এর উৎপাদন বন্ধ করে দেয়।
তবে কিছু প্রতিষ্ঠানে আগে উৎপাদিত হ্যালোথেন মজুত ছিল। মজুত কমে যাওয়ায় ঘাটতি মেটাতে ভারত থেকে নকল হ্যালোথেন বাজারে ঢুকেছে। এছাড়া বাজারে ভেজাল হ্যালোথেনও বিক্রি হচ্ছে বলে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।