চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড
আবারও মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভাঙল চুয়াডাঙ্গা। চলতি মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে আজ শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১১ শতাংশ।
শুক্রবার দুপুর ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
সর্বচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান বলেন, টানা বেশ কিছু দিন ধরেই চুয়াডাঙ্গায় ৪০-৪২ ডিগ্রিতে তাপমাত্রা ওঠা-নামা করছে।
চলতি মৌসুমে প্রায় প্রতিদিনই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হচ্ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গায়।
তাপদাহে রীতিমতো পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। কখনো মৃদু, কখনো মাঝারি, কখনো তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে এ অঞ্চলে। অতিরিক্ত গরমের কারণে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা।
রকিবুল হাসান বলেন, 'সূর্যের প্রখরতার কারণে মানুষের গরম অনুভূত হচ্ছে বেশি। বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু ২৬ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।'
আবহাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে সাবধানতা অবলম্বন করে চলাচল করার জন্য বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবারও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায় ৪২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গরম বাতাস ও সূর্যের প্রখরতার কারণে তাপমাত্রা এ অঞ্চলের মানুষের জন্য আরও অসহনীয় হয়ে উঠছে। তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সড়ক প্রায় জনশূন্য হয়ে যাচ্ছে। একেবারে প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে বিশুদ্ধ পানি, স্যালাইন ও শরবত বিতরণ করা হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা ভেমরুল্লাহ পাড়ার রিক্সাচালক হালিম মন্ডল বলেন, 'গরমে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। সড়কের পাশে রিক্সার ওপর কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি, বলতে পারব না।'
তিনি বলেন, 'গরিবের আবার গরম আছে! পেটের দায়ে ঘরের বাইরে। শীতকালে মানুষ কত কিছু দেয়, গরমের সময় কারও খোঁজ পাওয়া যায় না।'
চুয়াডাঙ্গা বড়বাজারের শরবত বিক্রেতা আলিম বলেন, 'মানুষ না থাকলে শরবত কার কাছে বিক্রি করব। গরমে ঠান্ডা শরবত খায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা সাধারণ মানুষ। শরবত নিয়ে বসেই আছি শুধু, বিক্রি নেই।'
চুয়াডাঙ্গা গুলশান পাড়ার বাসিন্দা ফরিদ বলেন, 'গরমে বাড়ির বাইরে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এত গরম গত বছরও পড়েনি। এ বছর চরম দুর্ভোগে পড়েছি।'
উল্লেখ্য, এর আগে গত শনিবার (২০ এপ্রিল) চুয়াডাঙ্গা জেলায় সর্বোচ্চ ৪২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এরপর রোববার (২১ এপ্রিল) ৪২.২ ডিগ্রি, সোমবার (২২ এপ্রিল) ৪০.৬ ডিগ্রি, মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ৩৯.৬ ডিগ্রি, বুধবার (২৪ এপ্রিল) ৪১.২ ডিগ্রি এবং বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।