কোরবানির ঈদে গবাদিপশুর কোনো ঘাটতি হবে না: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
আগামী কোরবানির বাজারে ১.৩০ কোটি গবাদিপশুর সরবরাহ নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে মৎস ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়। ফলে আসন্ন কোরবানি ঈদে গবাদিপশুর কোনো ঘাটতি হবে না বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আবদুর রহমান।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি আরও জানান, একইসাথে গবাদিপশু পরিবহন ও কেনাবেচায় চাঁদাবাজি ও মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করারও উদ্যোগ হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, গত বছর কোরবানির ঈদের বাজারে ১.২৫ কোটি গবাদিপশুর সরবরাহ ছিল। এরমধ্যে অবিক্রিত ছিল ১৯ লাখ। এবার কোরবানি উপলক্ষে বাজারে ১.৩০ কোটি গবাদিপশুর সরবরাহ থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে খামারীদের সাথে আলোচনা করে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, "উৎসবের দিন সামনে আসছে। এসময়ে সুবিধাবাদী গোষ্ঠী ও মতলববাজরা পুরো ব্যাপারটা ভিন্নখাতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারে। আগামী কোরবানি ঈদের সম্পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে আমাদের। গবাদিপশুর কোনো ধরনের ঘাটতি নেই। মধ্যস্বস্তভোগীদের যে বাড়াবাড়ি থাকে, সে বিষয়েও অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।"
গবাদিপশুর বাজার যেন স্থিতিশীল থাকে, দাম যেন মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে– সে বিষয়গুলো নিয়ে প্রস্তুতিমূলকভাবে খামারিদের সঙ্গে আলোচনা চলছে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, "দেশে পর্যাপ্ত গবাদিপশু রয়েছে। গরু আমদানির কোনো সিদ্ধান্ত নেই। অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে যেসব গরু আসে, সেগুলো যাতে আসতে না পারে– সেজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হবে।"
কোরবানির পশুর গাড়িতে চাঁদাবাজি বন্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে— জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, "ওই সময় মধ্যস্বত্বভোগী ও বিশেষ শ্রেণির মানুষ সুযোগ নেয়। যে কারণে অনেক সময় পরিস্থিতি মোকাবিলা করা, সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। কোরবানির আগে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করে এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করা হবে, যাতে পথে-ঘাঁটে চাঁদাবাজি ও মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।"
ফরিদপুরের মন্দিরে আগুনের ঘটনায় সম্পৃক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ফরিদপুরের মন্দিরে আগুনের ঘটনায় মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। আশা করা হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত সফল হবে।
মন্ত্রী আব্দুর রহমান সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য।
গত ১৮ এপ্রিল ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী এলাকা সার্বজনীন কালীমন্দিরে আগুন লাগে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই আগুন লাগানো হয়েছে, এমন সন্দেহে দুজন শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
এরপর থেকে ওই এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
গত ২০ এপ্রিল ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং নিহতদের বাড়িতে যান ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আগেই বিজিবি ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয় সেখানে।
আব্দুর রহমান বলেন, "এই ঘটনায় ৩১ জনকে অভিযুক্ত করে ৩টি মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৩ জন গ্রেপ্তার হয়েছে।"
মন্ত্রী বলেন, "আবেগে গা ভাসালে হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করছে। আসামিরা এই মুহূর্তে পলাতক। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে।"