নতুন গতিসীমা ধীরে ধীরে কার্যকর করা হবে: বিআরটিএ
দেশের কোন সড়কে, কত গতিতে কোন ধরনের যানবাহন চলবে, তা ঠিক করে দিয়েছে ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। তবে প্রথমে জনসচেতনতা তৈরি করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে নতুন গতিসীমা ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করা হবে।
বিআরটিএর প্রথম বিজ্ঞপ্তিতে এ গতিসীমা তাৎক্ষণিক প্রয়োগের কথা বলা হলেও বিআরটিএর মুখপাত্র মাহবুব-ই-রব্বানী গতকাল জানিয়েছেন, এটি ব্যাপকভাবে বাস্তবায়নে সময় লাগবে। নতুন নির্দেশিকা সম্পর্কে জনগণকে জানানোর জন্য প্রচারণা কর্মসূচি চালানো হবে।
রব্বানী জানান, এই অন্তর্বর্তী সময়কালে গতিসীমা লঙ্ঘন প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত ব্যবহার করা হবে। এর উদ্দেশ্য চালকদেরকে নতুন গতিসীমা সম্পর্কে জানানো।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে কঠোরভাবে নতুন গতিসীমা প্রয়োগ করা হবে বলে জানান রাব্বানী।
যানবাহনের গতি মনিটর করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্পিডগান ব্যবহার করবে। বিআরটিএ জানিয়েছে, কার্যকর প্রয়োগের জন্য পুলিশকে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম সরবরাহ করা হবে।
মোটরযানের গতিসীমা সংক্রান্ত নির্দেশিকা, ২০২৪-এ গাড়ির ধরন ও রাস্তার ক্যাটাগরির ওপর ভিত্তি করে যানবাহনের গতিসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। শহরের ভেতরে মোটরসাইকেল ও ট্রাক ঘন্টায় সর্বোচ্চ ৩০ কিলোমিটার এবং অন্যান্য যানবাহন সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে।
শহরের গতিসীমায় অনেক চালক, বিশেষ করে মোটরসাইকেল চালকরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সৈয়দ নুর-ই-আলম সাগর নামে একজন বাইকার বলেন, ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার গতি বেঁধে দেওয়া বাস্তবসম্মত নয়; এতে শহরে যানবাহনের গতি অনেক ধীর হয়ে যাবে। তিনি মোটরবাইকের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার করার দাবি জানান। তার মতে, এ গতিসীমায় সঠিক নিয়ন্ত্রণে নিরাপদে মোটরসাইকেল চালানো যাবে।
একইরকম উদ্বেগ প্রকাশ করে গাড়িচালক জানে আলম বলেন, গাড়িতে ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার গতি বজায় রাখা অসুবিধাজনক। আলমের মতে, এ গতির ফলে যানচলাচলের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে।
ঢাকার বর্তমান যানজট পরিস্থিতিতে জটিলতা আরও বেড়েছে। বিশ্বব্যাংকের ২০১৭ সালের একটি সমীক্ষায় জানানো হয়, ঢাকায় যানবাহনের গড় গত এক দশকে ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার থেকে কমে ৭ কিলোমিটারে নেমে এসেছে। ২০৩৫ সালের মধ্যে এ শহরে যানবাহনের গতি ঘণ্টায় ৪ কিলোমিটারে নেমে আসতে পারে, যা হাঁটার গতির চেয়ে ধীর।
নতুন নির্দেশিকায় অন্যান্য সড়ক ক্যাটাগরির জন্যও গতিসীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এক্সপ্রেসওয়েসহ জাতীয় মহাসড়কগুলোতে (ক্যাটাগরি এ) ট্রাক ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে, অন্যান্য যানবাহন চলতে পারবে সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার গতিতে।
এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার এবং অন্যান্য জাতীয় সড়ক ও জেলা সড়কগুলোতে সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে।
জাতীয় সড়কে (ক্যাটাগরি বি) বাইকের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার আর গাড়ি-বাস-মিনিবাস চলবে ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার গতিতে। ট্রাক ও আর্টিকুলেটেড লরির জন্য এই গতিসীমা সর্বোচ্চ ৪৫ কিলোমিটার। জেলা সড়কেও একই গতির মধ্যে থাকতে হবে।