এমপি আনারকে খুনের পর চামড়া ছাড়িয়ে মরদেহ টুকরো করেন অবৈধ অভিবাসী: এনডিটিভি
চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে খুন হয়েছেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনার। তার মরদেহ অবশ্য এখনও উদ্ধার করা যায়নি।
এরই মধ্যে আনারকে হত্যার ঘটনায় দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি। এদের মধ্যে জিহাদ হাওলাদার নামের এক অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীকে মুম্বাই থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর গতকাল বনগাঁ এলাকা থেকে গভীর রাতে জাহিদ নামের আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এমপি আনারকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় জিহাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের সিআইডির সূত্রের দাবি, ২৪ বছর বয়সি জিহাদ পেশায় কসাই।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের তদন্তের যত গভীরে যাচ্ছে এবং যত সময় গড়াচ্ছে, ততই ভয়ানক সব তথ্য সামনে আসছে।
কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে শুক্রবার (২৪ মে) এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলেছে, কলকাতায় একটি অ্যাপার্টমেন্টে এমপি আনারকে হত্যার পর তার চামড়া ছাড়িয়ে নেওয়া হয়। চামড়া ছাড়ানোর পর টুকরো টুকরো করা হয় তার মরদেহ। এরপর সেই সেগুলো প্লাস্টিকের প্যাকেটে করে শহরের বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেওয়া হয়।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, জিহাদ হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের পর পশ্চিমবঙ্গের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অনুসন্ধানে বড় অগ্রগতি এসেছে।
সিআইডি সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, কলকাতার নিউ টাউনের একটি অ্যাপার্টমেন্টে এমপি আনারকে খুন এবং তার দেহ টুকরো টুকরো করে কাটার কাজে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন জিহাদ।
তদন্তের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে সামনে এসেছে কতটা নিপুণভাবে এ অপরাধের পরিকল্পনা সাজানো ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাওলাদার জানিয়েছেন এ নৃশংস অপরাধের মাস্টারমাইন্ড বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক আক্তারুজ্জামান। আক্তারুজ্জামানের নির্দেশে আরও চার বাংলাদেশিকে নিয়ে নিউ টাউনের অ্যাপার্টমেন্টে এমপি আনারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন জিহাদ।
চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যাওয়ার পর গত ১৪ মে থেকে নিখোঁজ ছিলেন এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার।
এরপর গত বুধবার (২২ মে) বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, আনোয়ারুল আজীম আনারকে খুন করা হয়েছে এবং এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পরে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি নিউ টাউনের ওই অ্যাপার্টমেন্টের ভেতরে রক্তের দাগ খুঁজে পায়। বেশ কয়েকটি প্লাস্টিকের ব্যাগও উদ্ধার করে সেখান থেকে। ওই ব্যাগগুলো মরদেহের টুকরো ফেলার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল বলে ধারণা পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের।
পুলিশ দাবি করেছে, পরিস্থিতিগত প্রমাণে যে ইঙ্গিত মিলেছে, তাতে বোঝা যায়, এমপিকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়; এরপর তার মরদেহকে টুকরো টুকরো করা হয়।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পুলিশের দাবি, জিহাদ হাওলাদার জানিয়েছেন, এমপি আনারকে হত্যার পর তাদের দলটি মরদেহের সমস্ত মাংস আলাদা করে টুকরো টুকরো করে ফেলে, যাতে মরদেহ কোনোভাবেই শনাক্ত করা না যায়। এরপর হাড়গুলো ছোট ছোট টুকরো করে কেটে দেহাবশেষ কয়েকটি প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে ফেলা হয়। ওই ব্যাগগুলো কলকাতাজুড়ে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেওয়া হয়।
পুলিশ বলছে, তারা আরও তথ্য জানার এবং এমপি আনারের দেহের খণ্ডিতাংশ উদ্ধারের চেষ্টা করছে।
জিহাদ হাওলাদার খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলা বারাকপুর এলাকার জয়নাল হাওলাদারের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি মুম্বাইয়ে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে থাকছিলেন।