এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে অন্যতম সন্দেহভাজন সিয়াম হোসেন নেপালে 'আটক'
ঝিনাদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যা মামলার অন্যতম সন্দেহভাজন মো. সিয়াম হোসেনকে নেপালে আটক করা হয়েছে।
কলকাতার ফ্ল্যাটে নৃশংসভাবে হত্যার পর এমপি আনারের মরদেহের অংশ 'কসাই' জিহাদ হাওলাদারের সঙ্গে মিলে কমোডে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সিয়ামের বিরুদ্ধে। জিহাদ হাওলাদার ইতোমধ্যেই কলকাতায় আটক হয়েছেন।
কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে প্রথম আলো জানিয়েছে, নেপালের পুলিশ বৃহস্পতিবার (৩০ মে) কাঠমান্ডুতে সিয়াম হোসেনকে আটক করেছে।
সিয়ামের প্রত্যর্পণের জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস ইতোমধ্যেই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।
এর আগে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, সিয়াম নেপালে লুকিয়ে ছিল এবং কলকাতা গোয়েন্দা শাখার নজরদারিতে ছিল।
এদিকে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) চার সদস্যের একটি দল ডিবি প্রধান হারুন-অর-রশিদের নেতৃত্বে আজ সকালে কাঠমান্ডুর উদ্দেশে রওনা হন।
সকাল ১০টার দিকে দলটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
রওনা হওয়ার আগে ডিবি প্রধান হারুন সাংবাদিকদের বলেন, আজিম হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন বেশ কয়েকজন কাঠমান্ডুতে গেছে। কেউ কেউ অন্য দেশে চলে গেছে, আবার কেউ কেউ সেখানেই আছে।
"আমরা বিষয়টি ইন্টারপোলের মাধ্যমে নেপাল পুলিশকে অবহিত করেছি এবং তাদেরকে গ্রেপ্তারে অনুরোধ করেছি।"
"তারই ধারাবাহিকতায় মামলার তদন্তে অগ্রগতির জন্য নেপালে যাচ্ছি। সেখানে আসামিরা কোন কোন জায়গায় অবস্থান করেছিল, আমরা তা পরিদর্শন করবো," বলেন ডিবি প্রধান।
তিনি আরও বলেন, "ইদানিং বাংলাদেশের অনেক সন্ত্রাসী কাঠামান্ডুকে ব্যবহার করছে। সংসদ সদস্য হত্যার মাস্টারমাইন্ড শাহীনও কাঠমান্ডুকে ব্যবহার করে অন্য দেশে চলে গেছে। অন্যান্য আসামিদের সম্পর্কে একই তথ্য পাচ্ছি। এছাড়া এর আগেও অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ওখানে থাকতে দেখা গেছে। ভারতের মতো নেপালেও যাচ্ছি তদন্তের কাজে। আমরা সেখানকার পুলিশের সাথে ইন্টারেকশন করবো। যাতে অপরাধ করে সেখানে গিয়ে অবস্থান করতে না পারে।"
এর আগে ২৩ মে, ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে বাংলাদেশে রিমান্ডে থাকা তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ঢাকায় আসে কলকাতা সিআইডির চার সদস্যের একটি দল।
পরবর্তীতে ২৬ মে বাংলাদেশ ডিবির তিন সদস্যের একটি দল অধিকতর তদন্তের জন্য কলকাতায় যায়।
উল্লেখ্য, তিনবারের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যাওয়ার পরের দিন নিখোঁজ হন। এরপর গত ২২ মে সকালে ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে কলকাতার নিউ টাউন এলাকার একটি ফ্ল্যাটে তার হত্যাণ্ডের খবর দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে উভয় দেশের পুলিশ বাহিনীর যৌথ তদন্ত ও প্রচেষ্টায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন তিনজনকে বাংলাদেশে থেকে এবং একজনকে কলকাতা থেকে আটক করা হয়।