ঢাকার বায়ু দূষণ রোধে নির্মাণস্থলে আচ্ছাদন ব্যবহারসহ মেয়র আতিকের ৫ ঘোষণা
বায়ু দূষণ রোধে নির্মাণস্থলে আচ্ছাদন ব্যবহারসহ ৫ পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
তার অন্য ৪টি পদক্ষেপ হলো— বায়ুবাহিত সূক্ষ্ম কণা ছড়িয়ে দেয় এমন উপকরণ বহনকারী যানবাহনের জন্য উপযুক্ত আচ্ছাদন ব্যবহার নিশ্চিত করা; কালো ধোঁয়া নির্গমন হয় এমন অনুপযুক্ত যানবাহন নিষিদ্ধ করা; অপ্রয়োজনীয় পাতা ও বর্জ্য পোড়ানো পরিহার করা এবং নালা ও খালের অবৈধ পয়ঃনিষ্কাশন লাইন বন্ধ করা।
সোমবার (২ জুন) রাজধানীতে শক্তি ফাউন্ডেশন ও ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মেয়র আতিক আরও বলেন, "শহরের প্রায় সকল ভবনেই এয়ার কন্ডিশন লাগানো আছে। সবাই হাজার হাজার টাকা খরচ করে ঘর ঠান্ডা করার জন্য এসি লাগাচ্ছে। কিন্তু সুয়ারেজ ব্যবস্থাপনা করার বিষয়ে কেউ চিন্তা করছে না।"
"নির্বিচারে শহরের খালে, ড্রেনে সুয়ারেজের সংযোগ দিয়ে পানি, বায়ু দূষণ করছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। এসব অবৈধ সংযোগ বন্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব। শহরের পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। বিভিন্ন সংস্থাকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে," যোগ করেন মেয়র।
এছাড়া, ফার্মগেটের আনোয়ারা উদ্যানে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
মেয়র বলেন, "ফার্মগেটের আনোয়ারা উদ্যানে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না, এটি পার্কিংয়ের স্থান হিসেবে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।"
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বায়ু দূষণ শুধু একটি দেশকেন্দ্রিক সমস্যা নয়; এটি একটি আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক সমস্যা।
"আমাদের এই সমস্যার সমাধানের জন্য, দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং সমন্বয় প্রয়োজন; বিশেষ করে ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মধ্যে এ সহযোগিতা বেশি দরকার, কারণ এক দেশের দূষণ অন্য দেশকেও প্রভাবিত করে," বলেন তিনি।
একইসঙ্গে, বায়ু দূষণ রোধে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি সব পক্ষের সমন্বিত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপরেও তিনি জোর দেন।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, "বায়ু দূষণ শুধু শারীরিক ক্ষতিই করে না, অর্থনৈতিক ক্ষতিও করে, তাই প্রত্যেক নাগরিককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হবে।"
অনুষ্ঠানে ইউএসএআইডি ব্যুরো ফর এশিয়ার ডেপুটি সহকারী প্রশাসক অঞ্জলি কৌর বলেন, বায়ু দূষণের দীর্ঘায়িত এক্সপোজার শিশুদের মানসিক বিকাশ এবং শিক্ষার ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে; যা বছরে প্রায় ২০ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী।
তিনি বলেন, "এই সমস্যার মূল কারণগুলোকে মোকাবেলা এবং আরও পরিষ্কার, সবুজ ও সাশ্রয়ী শক্তির উৎস বাড়াতে বাংলাদেশসহ পুরো দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে কাজ করে যাচ্ছে ইউএসএআইডি।"
নিরাপদ শক্তি উৎপাদনে পানি, সূর্যের আলো এবং বায়ুর মতো উৎসগুলো ব্যবহারের পরামর্শ দেন অঞ্জলি কৌর। তিনি বলেন, এসব পন্থা অবলম্বন করলে, আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ ৮ শতাংশ পর্যন্ত কমানো যেতে পারে, একইসঙ্গে এর মাধ্যমে নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে নতুন কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে।