শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার নামাজে মুসল্লিদের ঢল
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে সোমবার (১৭ জুন) সকাল ৯টায় ঈদুল আজহার জামাতটি অনুষ্ঠিত হয়। ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ১৯৭তম ঈদ জামাত আয়োজিত হয়েছে আজ।
নামাজে ইমামতি করেন জেলা মারকাজ মসজিদের খতিব মাওলানা হিফজুর রহমান খান। প্রতিবারের মতো এবারও মুসল্লিদের ঢল নামে শোলাকিয়ায়।
প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ নামাজ আদায় করেন শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। পরে নামাজ শেষে মুসলিম উম্মার শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
এর আগে সকাল থেকেই মুসল্লিরা আসতে থাকেন ঈদগাহ ময়দানের দিকে। দূরবর্তী স্থানের মুসুল্লিদের সুবিধার্থে এবারও দুটি বিশেষ ট্রেন চালু করে রেল কর্তৃপক্ষ। শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল নামে ট্রেন দুটি চলাচল করে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব ও কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রেলরুটে।
ঈদ জামাতকে ঘিরে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে নেয়া হয় তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। র্যাব, পুলিশের পাশাপাশি সার্বিক নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয় দুই প্লাটুন বিজিবি।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ সাংবাদিকদের জানান, নিরাপত্তার স্বার্থে ঈদগাহ ময়দানে আর্চওয়ে, ওয়াচ টাওয়ার, ড্রোন ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা, মাইনোকোলার ও সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের পাশাপাশি বিজিবি সদস্যও মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য, এক নারী এবং এক জঙ্গিসহ চারজন নিহত হন। ওই ঘটনার পর থেকেই প্রতি ঈদ জামাতকে ঘিরে শোলাকিয়ায় নেয় হয় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
জনশ্রুতি আছে, শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ ঈদের জামাতের মোনাজাতে ভবিষ্যতে মাঠে মুসল্লিদের প্রাচুর্যতা প্রকাশে 'সোয়া লাখ' কথাটি ব্যবহার করেন। আরেক জনশ্রুতি- সেই দিনের সেই জামাতে ১ লাখ ২৫ হাজার অর্থাৎ সোয়া লাখ লোক জমায়েত হয়েছিলেন। এ 'সোয়া লাখ' থেকেই 'শোলাকিয়া' নামটি চালু হয়েছে ধারণা।
১৯৫০ সালে স্থানীয় দেওয়ান মান্নান দাদ খাঁ ( ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর) ঈদগাহের জন্য ৪ দশমিক ৩৫ একর জমি শোলাকিয়া ঈদগাহে ওয়াকফ করেন। এই মাঠে ২৬৫টি কাতার আছে, প্রতিটি কাতারে ৫০০ মুসল্লি নামাজের জন্য দাঁড়াতে পারেন।