মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব ও বিও অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ
দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব এবং বিও অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট দুটি প্রতিষ্ঠান।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) মতিউর, তার দুই স্ত্রী ও সন্তান এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
এসব অ্যাকাউন্ট ৩০ দিনের জন্য জব্দ করতে সব ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থাটি।
বিএফআইইউ-এর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা চিঠি পাঠানোর বিষয়টি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে নিশ্চিত করে বলেন, 'ব্যাংক হিসাবের সব তথ্য পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'
এর আগে এদিন মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের বেনিফিশিয়ারি ওনার অ্যাকাউন্ট (বিও হিসাব) জব্দ করতে সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডকে নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
মতিউর রহামন; তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ; প্রথম পক্ষের সন্তান ফারজানা রহমান ইপ্সিতা, আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণব; দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আক্তার শিবলী; দ্বিতীয় পক্ষের সন্তান ইফতেমা রহমান মাধবী, মুশফিকুর রহমান ইফাত ও ইরফানুর রহমান ইরফান-এর ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছে বিএফআইইউ।
মঙ্গলবার সকালে বিএফআইইউ দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে এ নির্দেশনা দেয়।
এছাড়া আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে এসব অ্যাকাউন্টের হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি, লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি তথ্য সরবরাহ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোকে।
মতিউর বছরের পর বছর ধরে রাজস্ব কার্যালয়ে তার ঊর্ধ্বতন পদের অপব্যবহার করে আর্থিক ও রিয়েল এস্টেট সম্পদসহ কয়েকশ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দ্বিতীয়পক্ষের সন্তান ইফাত ১৫ লাখ টাকা খরচ করে গত ঈদুল আজহার সময় একটি ছাগল কেনার পরে দেশজুড়ে আলোচনায় আসেন মতিউর রহমান। কিন্তু দেখা যায়, তার বিপুল পরিমাণ গোপন সম্পদের কেবল একটি কণামাত্র ১৫ লাখ টাকার ওই ছাগল।
৪ জুন তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্তে দেখা যায়, পুবাইলে মতিউর রহমানের নামে ৫৫ বিঘা জমি, একটি পার্ক, আরও ৩০০ বিঘা জমি, একটি জুতার কারখানা, দামি গাড়ি এবং তার বা তার আত্মীয়স্বজনের নামে বাড়ি রয়েছে।
গতকাল সোমবার (২৪ জুন) ঢাকার একটি আদালত মতিউর রহমান, তার প্রথম স্ত্রী এবং তাদের সন্তানের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
একইদিন মতিউরকে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদ থেকে অপসারণের জন্য সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়।
এর আগে তাকে এনবিআর কাস্টমস, এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্টের পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছিল।