চট্টগ্রামে রিয়াজুদ্দিন বাজারে আগুনে নিহত ৩; সরু গলির কারণে ঢুকতে পারেনি দমকলের গাড়ি
শুক্রবার (২৮ জুন) ভোররাতে চট্টগ্রাম নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারের তামাকুমন্ডি লেনের মোহাম্মদিয়া প্লাজায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত তিনজন নিহত ও দুইজন আহত হয়েছেন।
অগ্নিনির্বাপণ কর্মীরা চারঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আগুনের শিকার ভবনটিতে যাওয়ার রাস্তাগুলো সরু হওয়ায় সেখানে দমকলের গাড়ি পৌঁছাতে পারেনি। তাই আগুন নেভাতে প্রায় চার ঘণ্টা সময় লাগে।
আগুনে মোবাইল ফোনের অ্যাক্সেসরিজ বিক্রির ছয়টি দোকান পুড়ে গেছে। এতে আনুমানিক ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করছেন ব্যবসায়ীরা।
নিহতরা হলেন শামসুল আলমের ছেলে মোহাম্মদ রিদোয়ান (৪৫), বেটা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ শাহেদ (১৮) এবং সাঈদ হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন (১৮)। তারা সবাই চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার বাসিন্দা।
নিহতেরা মার্কেটের বিভিন্ন দোকানের কর্মচারী ছিলেন। তারা রাতে মোহাম্মদিয়া প্লাজার চতুর্থ তলায় ঘুমাতেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুর-ই-আলম আশিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রিয়াজউদ্দিন বাজারের অগ্নিকাণ্ডে আহত পাঁচজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। 'কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মধ্যে তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত এক নারী ও এক শিশুকে হাসপাতালের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।'
'ডাক্তারদের মতে, আগুনের ধোঁয়ায় শ্বাসরোধে নিহতদের মৃত্যু হয়েছে,' তিনি আরও বলেন।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে মোহাম্মদিয়া মার্কেটের চতুর্থ তলায় বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন দ্রুত পাশের মার্কেটে ছড়িয়ে পড়ে।
আগ্রাবাদ, চন্দনপুরা, লামারবাজার ও নন্দনকানন স্টেশন থেকে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট এসে কাজ শুরু করার পর শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে প্রায় চারঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক এমডি আব্দুল মালেক টিবিএসকে বলেন, ফায়ার সার্ভিস রাত ১টা ৪০ মিনিটে জরুরি কলের সাড়া দেয়। 'তবে সরু গলির কারণে দমকলের গাড়ি ভেতরে প্রবেশ করতে অসুবিধা হয়। দমকলকর্মীরা বাজারের বাইরের প্রধান সড়ক থেকে পানি ছিটিয়েছেন।'
বাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, 'মার্কেটের বিভিন্ন দোকানের কর্মচারীরা ওপরের তলায় থাকতেন। শুক্রবার হওয়ায় অনেকে বাড়ি চলে গিয়েছিলেন, নাহলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারত।'
ফায়ার সার্ভিসের মতে, প্রায় ২০০টি মার্কেটের রিয়াজউদ্দিন বাজার অগ্নিকাণ্ডের সবচেয়ে বেশিতে ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রায় ১০ হাজার দোকানের এ বাজারে এ বছরের ২ জানুয়ারি এবং ৮ ফেব্রুয়ারি দুবার আগুন ধরলেও দৃশ্যত এখন পর্যন্ত কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।