সাদিক অ্যাগ্রোকে ‘অনৈতিক’ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে সাভারের রাষ্ট্রায়ত্ত খামারে দুদকের অভিযান
সাদিক অ্যাগ্রোকে 'অনৈতিক' সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ তদন্তে সাভারে অবস্থিত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সরকারি প্রতিষ্ঠানটির দরপত্র জালিয়াতিসহ নানান দুর্নীতির অভিযোগ অভিযানের সময় খতিয়ে দেখেছেন দুদকের সদস্যরা।
আজ সোমবার (১ জুলাই) দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের টিম এই অভিযান পরিচালনা করে।
রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতের ছাগলকাণ্ডের পর থেকে সাদিক অ্যাগ্রোকে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। পরে অবৈধভাগে খাল ও সিটি করপোরেশনের জায়গা দখল করে গড়ে তোলা এবং ট্রেড লাইসেন্স না নেয়ায় সাদিক অ্যাগ্রোর খামার ভেঙে দেয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।
সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে দেশের গরু আনার অভিযোগ রয়েছে। আমদানির এলসি (ঋণপত্র) না খুলেই ২০২১ সালে ১৮টি ব্রাহমা জাতের গরু জাল কাগজপত্র তৈরি করে দেশে আনেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা এসব গরু শাহীওয়াল জাতের বলে নথিতে উল্লেখ করেছিল সাদিক অ্যাগ্রো।
সরকার এর আগে ২০১৬ সালে ব্রাহমা আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়।
আমদানি নিষিদ্ধ উন্নত জাতের ওই গরুগুলো হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জব্দ করেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। একটি গরু তখনি মারা যায়। অন্য গরুগুলো পাঠানো হয় সাভারের গো প্রজনন কেন্দ্রে।
বিষয়টি নিয়ে ওই বছরের ৩ আগস্ট হাইকোর্টেও শুনানি হয়েছিল, এসময় উচ্চ আদালত কাস্টমস কর্মকর্তাদের গরুগুলো জব্দ করার সিদ্ধান্তের পক্ষেই রায় দেন।
২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গরুগুলো সাভারের গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারেই লালন পালন হয়। পরে গরুর মাংসের চাহিদা মেটাতে দরপত্রের মাধ্যমে নিলামের বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
দুদক কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ অভিযানের পর সাংবাদিকদের জানান, "তখন মূলত মাংসের চাহিদা পূরণে একটি কমিটি করে ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশনের কাছে ১৬টি গরু সূলভমূল্যে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু ওই গরুগুলো পরে কীভাবে সাদিক অ্যাগ্রোর কাছে গেল এ বিষয়েই মূলত আজকের অভিযান"।
অভিযোগ রয়েছে, এই সুযোগে সাদিক অ্যাগ্রো আবার স্বল্পমূল্য গরুগুলো নিলামে জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়ে নেয়।
অভিযান পরিচালনাকালে দুদক কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের পরিচালক মো. মনিরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।