সাভারে সাদিক অ্যাগ্রোর খামারে মিলল ১৫ লাখ টাকার সেই ছাগল
কেচো খুঁড়তে সাপ বেড়িয়ে আসার মতো ছেলে ইফাতের যে ছাগল কেনাকে কেন্দ্র করে রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের বিপুল সম্পদ অর্জনের তথ্য বেড়িয়ে আসতে থাকে – উন্নত জাতের সেই ছাগলটি সাভারে সাদিক অ্যাগ্রোর খামারে রাখা হয়েছে।
আজ সোমবার (১ জুলাই) সাভারের ভাকুর্তায় অবস্থিত সাদিক অ্যাগ্রোর এই খামারে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে দুদকের ৯ সদস্যের একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করে।
এসময় খামারটিতে ৭টি নিষিদ্ধ ব্রাহামা জাতের গরুর বাছুর এবং খামারের একটি অংশে নীল রংয়ের পলিথিন দিয়ে চারপাশ ঢাকা অবস্থায় আলোচিত ১৫ লাখ টাকার ছাগলটি দেখতে পান বলে জানান তাঁরা।
অভিযান শেষে আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, 'অভিযানে আমরা খামারের বীজ (স্পার্ম) দেওয়ার হিসাব খাতা ও কসাই খাতা দুটি জব্দ করেছি। সেখানে দেখা গেছে গত মাসে ৫টি ব্রাহামা জাতের গাভীকে স্পার্ম দেওয়া হয়েছে। যদিও খামারে ওই পাঁচটি ব্রাহামা জাতের গাভী দেখা যায়নি। তবে এসময় কাপড় দিয়ে ঘিরে রাখা একটি ছোট কক্ষে ১৫ লাখ টাকা দামের আলোচিত সেই ছাগলটি দেখা গেছে।'
'এছাড়াও আমরা ৭ টি ব্রাহামা জাতের বাছুর পেয়েছি। সেগুলো বিক্রি বা স্থানান্তর করতে নিষেধ করা হয়েছে।'
এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে দুদকের ৯ সদস্যের একটি দল সাভারের কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে যান।
সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে দেশের গরু আনার অভিযোগ রয়েছে। আমদানির এলসি (ঋণপত্র) না খুলেই ২০২১ সালে ১৮টি ব্রাহমা জাতের গরু জাল কাগজপত্র তৈরি করে দেশে আনেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা এসব গরু শাহীওয়াল জাতের বলে নথিতে উল্লেখ করেছিল সাদিক অ্যাগ্রো।
আমদানি নিষিদ্ধ উন্নত জাতের ওই গরুগুলো হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জব্দ করেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। একটি গরু তখনি মারা যায়। অন্য গরুগুলো পাঠানো হয় সাভারের গো প্রজনন কেন্দ্রে।
২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গরুগুলো সাভারের গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারেই লালন পালন হয়। পরে গরুর মাংসের চাহিদা মেটাতে দরপত্রের মাধ্যমে নিলামের বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের জানান, "তখন মূলত মাংসের চাহিদা পূরণে একটি কমিটি করে ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশনের কাছে ১৬টি গরু সূলভমূল্যে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু ওই গরুগুলো পরে কীভাবে সাদিক অ্যাগ্রোর কাছে গেল এ বিষয়েই মূলত আজকের অভিযান।"
তিনি আরো বলেন, এখন আমরা কমিশনের কাছে এব্যাপারে প্রতিবেদন জমা দেব। এরপর কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা তাদের (সাদিক অ্যাগ্রো) দুটি খামারের বিষয়ে তথ্য পেয়েছিলাম। এখন আরো দুটি খামার তাদের রয়েছে বলে জানতে পেরেছি।