শিক্ষার্থীদের নিরাপদ চলাচলে চালু হয়েছে স্মার্ট স্কুল বাস
বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য পাইলট স্মার্ট স্কুল বাস সার্ভিস চালু করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর পরিষেবাটি আজ (৩ জুলাই) উদ্বোধন করেছেন।
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে ঢাকার যানজট মোকাবেলা করাই এই উদ্যোগের লক্ষ্য। পরিষেবাটির মধ্যে রয়েছে রিয়েল-টাইম নজরদারির জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা, অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য একটি স্টুডেন্ট ট্র্যাকিং সিস্টেম এবং একটি ডেডিকেটেড মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন যা অভিভাবকদের যাতায়াতের সময় তাদের সন্তানদের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করবে।
ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম এই উদ্যোগকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধান হিসেবে দেখছেন।
তিনি টিবিএসকে বলেন, "আমাদের লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের বাস সার্ভিসের আওতায় আনার মাধ্যমে ঢাকা শহরের যানজট কমানো। এটি শিক্ষার্থীদের বাসা থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং সেখান থেকে আবারো বাসায় নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করবে।"
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (বিআরটিসি) এর দেয়া তিনটি ডাবল-ডেকার বাস শিক্ষার্থীদের পিক-আপ (ওঠানো) এবং ড্রপ-অফের (নামানো) জন্য ডিজাইন করা তিনটি নির্দিষ্ট রুটে চলাচল করবে। প্রতিটি বাসের ধারণক্ষমতা ৭৫ জন এবং বাসগুলোতে আরামদায়ক যাতায়াতের জন্য যথেষ্ট জায়গা রয়েছে।
পরিষেবাটির জন্য একজন শিক্ষার্থীকে প্রতি মাসে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা খরচ করতে হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে ঠিকভাবে বাস ব্যবহার করতে পারে তার জন্য সিটি কর্পোরেশন সারা শহরের ৩৯টি স্থানে নির্দিষ্ট স্কুল বাস স্টপ নির্মাণ করেছে এবং পরিষেবাটি কার্যকর রাখতে অতিরিক্ত আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে।
বনানী বিদ্যানিকেতনের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. এনামুল হক এ উদ্যোগে নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, "শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের আবেদনের ভিত্তিতে তিনটি বাসের যাত্রী পেয়েছি। আরো শিক্ষার্থী আগ্রহী হলে বাসের সংখ্যা বাড়ানো হবে।"
বিআরটিসি স্কুলটিকে অন্যান্য পরিবহনের তুলনায় ভাড়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ছাড় দিচ্ছে। প্রাথমিকভাবে, তৃতীয় শ্রেণী থেকে শুরু করে থেকে পরবর্তী শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের পরিষেবার জন্য অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
বিআরটিসি'র উপ-মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) শুকদেব ঢালী বলেন, "চুক্তি অনুযায়ী বনানী বিদ্যানিকেতনকে তিনটি বাস ভাড়া দিচ্ছি। প্রতিটি বাসে ৭৫ জন যাত্রীর সিট রয়েছে। অন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্কুল বাসের জন্য আগ্রহী থাকলেও আমরা বাস দিতে পারবো।"
ঢাকায় স্কুল বাস সার্ভিস বাস্তবায়নে এটি দ্বিতীয় প্রচেষ্টা। এর আগে ২০১১ সালে একটি পরিষেবা চালু হওয়ার কয়েক মাস পরেই বন্ধ হয়ে যায়।
ট্রাফিক বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন, স্কুল-সম্পর্কিত পরিবহণ প্রধান সড়কগুলোতে যানজট সৃষ্টির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। শহরের ট্র্যাফিক প্রবাহের জন্য সীমিত জায়গা থাকার কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। বর্তমানে ঢাকায় ট্র্যাফিক প্রবাহের জন্য ৬ শতাংশেরও কম জায়গা রয়েছে।
এদিকে শুধু একটি স্কুলের জন্য চালু না করে তা রুট ভিত্তিক বাস সার্ভিস চালু করলে বেশি ফল পাওয়া যাবে বলে মনে করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)।
সংগঠনটির সভাপতি আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, "প্রতিটি স্কুলের সক্ষমতাও নেই আলাদা স্কুল বাস সার্ভিস চালু করার। ফলে রুট ভিত্তিক সার্ভিস করলে সব স্কুল এর সুফল পাবে। শহরের যানজটও কমবে।"