আপিল নিস্পত্তির আগে সাজা স্থগিত হয় না: ড. ইউনূসের মামলায় হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলায় প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ৬ মাসের সাজা শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে স্থগিতের আদেশ বাতিলের রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
রায়ের পর্যবেক্ষণ বলা হয়েছে, সাজা স্থগিতের কোনো বিধান নেই। আপিল নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সাজা সাব্যস্ত হওয়া কার্যকর থাকবে। এটি কেবল আপিল নিস্পত্তি করার পরে আপিল নাকচ, আপিল নিশ্চিত করা এবং সংশোধন করা যেতে পারে।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ ৫০ পৃষ্ঠার এই রায় প্রকাশ করেছেন।
সাজার বিরুদ্ধে আপিলে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনকে গত ২৮ জানুয়ারি জামিন দেয় শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করা হয়। সেদিন শ্রম আদালতের সাজা স্থগিত করে আদেশ দিয়েছিল শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন মামলা করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা এ মামলায় ড. ইউনূসের ৬ মাসের সাজা শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে স্থগিতের আদেশ গত ১৮ মার্চ বাতিল করে রায় দেয় হাইকোর্ট। রায়ে ড. ইউনূসের ৬ মাসের সাজা চলমান থাকবে বলে রায়ে বলা হয়। এখন ৫০ পৃষ্ঠার এই রায় প্রকাশ হলো।
এর আগে শ্রম আইন লঙ্ঘনের এ মামলায় চলতি বছর ১ জানুয়ারি ৬ মাসের সাজা হয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার আসামির। রায় প্রদানকারী বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানার স্বাক্ষরের পর ৮৪ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, আসামিরা শ্রম আইনের বিধান লঙ্ঘন করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে।
রায়ে আসামি গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর সংশ্লিষ্ট ধারায় ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে দশ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও অপর একটি ধারায় অপরাধে পঁচিশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে অতিরিক্ত পনেরো দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। তবে সেদিন আপিল করার শর্তে ড. ইউনূসসহ আসামিদের ১ মাসের জামিন দেয়া হয়।
ড. ইউনূস এবং গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মামলাটি রুজু করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।