১১০ কোটি টাকা অর্থপাচার মামলা: লা মেরিডিয়ানের মালিক আমিন আহমেদ কারাগারে
১১০ কোটি টাকা অর্থপাচারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় আজ বুধবার (১০ জুলাই) ঢাকার লা মেরিডিয়ানের মালিক আমিন আহমেদকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
এর আগে আজ ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামস জগলুল হোসেনের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে তিনি আত্মসমর্পণে করেন। আসামি আমিন আহমেদের পক্ষের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী জামিন চেয়ে শুনানি করেন। অপরদিকে দুদক এই জামিনের বিরোধিতা করে।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিনের বিষয়ে আদেশের জন্য বিকাল ৩টায় সময় নির্ধারণ করেন। এরপর আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ মামলায় বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চু ও তার স্ত্রী শিরিন আক্তারকেও আসামি করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৬ মে বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চু, তার পরিবারের সদস্য এবং হোটেল লা মেরিডিয়ানের মালিক আমিন আহমেদের বিরুদ্ধে প্রায় ৯৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও অর্থ পাচারের অভিযোগে করা মামলায় চার্জশিট অনুমোদন করে দুদক। পরে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১২ সালের ৮ জুলাই বাচ্চু আমিনের সঙ্গে ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকায় ৩০.২৫ কাঠার একটি প্লট কেনার চুক্তি করেন। জমির প্রকৃত মূল্য ১১০ কোটি টাকা হওয়া সত্ত্বেও দলিল বা চুক্তি সইয়ের সময় বাচ্চু মাত্র ১০ কোটি টাকা পরিশোধ করেন।
দুদকের তথ্যমতে, বাচ্চু তার অবৈধ আয় গোপন করার চেষ্টা হিসেবে জমির রেজিস্ট্রেশনে ৯৪.৭৫ কোটি টাকার কথা চেপে যান।এভাবে তিনি ৮.৫২ লাখ টাকার বেশি কর ফাঁকি দেন।
অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বাচ্চুর বিরুদ্ধে এটিই প্রথম অভিযোগপত্র।
২০২৩ সালের ৩ অক্টোবর দুদকের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নুরুল হুদা মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন: বাচ্চুর স্ত্রী শিরিন আক্তার, তার ভাই শেখ শাহরিয়ার পান্না, তার ছেলে শেখ রাফা হাই ও শেখ সাবিত হাই অনিক এবং হোটেল লা মেরিডিয়ানের মালিক আমিন আহমেদ।
এর আগে ২০২৩ সালের জুনে বেসিক ব্যাংকের ২ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রায় আট বছর আগে দায়ের করা ৫৯টি ঋণ কেলেঙ্কারির মামলায় বাচ্চুসহ ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, বাচ্চুসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও অসংখ্য কর্মকর্তা জামানতের বিনিময়ে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। আসামিরা ঋণের নামে বেসিক ব্যাংক থেকে প্রায় ২২৬৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।
মামলার আসামিদের মধ্যে বাচ্চু, ব্যাংকটির কোম্পানি সচিব শাহ আলম ভূঁইয়াসহ ৪৬ জন ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ১০১ জন ঋণগ্রহীতা রয়েছেন। ৫৯টি মামলার মধ্যে ৫৮টিতে বাচ্চু ও শাহ আলম জড়িত ছিলেন।