আগামী ৬ মাসে ১৬ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকার জ্বালানি তেল কিনবে সরকার
এ বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারিকভাবে (জিটুজি) মেয়াদি চুক্তির আওতায় ১৬ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকার ১৮.৩০ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানি করবে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে জ্বালানি বিভাগের উপস্থাপন করা এ প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে বলে সভাশেষে সাংবাদিকদের জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান।
এছাড়া জ্বালানি বিভাগের আরেক প্রস্তাবে স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাবও অনুমোদন করেছে কমিটি।
১৮.৩০ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি আমদানি
ওমান, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, আবর আমিরাত, চীন ও ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থেকে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) ১৬ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানি করবে।
এছাড়া জিটুজি চুক্তির আওতায় আরেকটি প্রস্তাবের অধীনে একই সময়ে ভারতের নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল কিনেব সরকার। এতে ২৭৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছেন মাহমুদুল হোসাইন খান।
অর্থাৎ সবমিলিয়ে আগামী ছয়মাসে জিটুজি চুক্তির আওতায় বিপিসি ১৬ হাজার ৭৫৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৮.৩০ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানি করবে।
এসব চুক্তির বাইরেও আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে জ্বালানি তেল সংগ্রহ করবে বিপিসি। বিপিসি বছরে প্রায় ৫০ লাখ মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল সংগ্রহ করে থাকে।
বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩–২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৪৮.৮০ লাখ মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল এবং ১৩.১৪ লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছে।
সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি বিপিসিকে জিটুজি পর্যায়ে মেয়াদি চুক্তির আওতায় ১৫ হাজার ৮২ কোটি টাকায় ১৮.৫০ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানির অনুমোদন দিয়েছিল।
স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি
জ্বালানি বিভাগের আরেক প্রস্তাবে স্পট মার্কেট থেকে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনকে (পেট্রোবাংলা) এক কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
সুইজারল্যান্ডের টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড থেকে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি কেনা হবে ১২ ডলার ৫৮ সেন্টে।
একটি কার্গোতে ৩৩ লাখ এমএমবিটিইউ এলএনজি থাকে। এই এলএনজি আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ৫৮৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
এ কার্গো এলএনজি কেনার অনুমোদনের মাধ্যমে চলতি বছরে পেট্রোবাংলাকে স্পট মার্কেট থেকে মোট ২৩ কার্গো এলএনজি কেনার অনুমোদন দিলো ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
এর বাইরে জিটুজি চুক্তির আওতায়ও এলএনজি আমদানি করছে সরকার।
জ্বালানি বিভাগের প্রস্তাবের বাইরে কৃষি মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রস্তাবে কানাডিয়ান কমার্সিয়াল করপোরেশন থেকে ৮০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন প্রতি মেট্রিক টন সার ২৭৫ ডলার ৫০ সেন্টে কিনবে। এজন্য মোট ব্যয় হবে ২৬০ কোটি টাকা।