সিটি কলেজের সামনে সংঘর্ষে নিহত যুবক ছিলেন পাপোশ বিক্রেতা
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকার নিউমার্কেট-সায়েন্সল্যাব এলাকায় সংঘর্ষে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একজনের পরিচয় জানা গেছে। নিহত ব্যক্তির নাম শাহজাহান (২৪)। তিনি বলাকা সিনেমা হলের সামনে ফুটপাতে পাপোশ বিক্রি করতেন বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, ঢাকা সিটি কলেজের সামনে ফুটপাতে ওই যুবককে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। স্থানীয় কয়েকজন তাকে উদ্ধার করে সন্ধ্যা ৬টার দিকে পপুলার মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে সন্ধ্যা ৭টায় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে এসে শাহজাহানের মরদেহ শনাক্ত করেন তার মা আয়েশা বেগম ও মামা মোসলেম উদ্দিন। তারা জানান, শাহজাহানের বাড়ি কেরানীগঞ্জের মীরেরবাগ পোস্তগোলা এলাকায়। তাঁর বাবার নাম মৃত মহসিন। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে শাহজাহান ছিলেন তৃতীয়। তিনি স্ত্রীকে নিয়ে কামরাঙ্গীচরের চান মসজিদ এলাকায় থাকতেন।
নিহতের মা আয়েশা বেগম বলেন, 'আজ সন্ধ্যার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক ছাত্র আমাকে ফোন করে জানায় আপনার ছেলে গুলিতে আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে আছে। পরে আমরা ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগের মর্গে এসে আমার ছেলের মরদেহ শনাক্ত করি।'
তিনি আরও বলেন, 'আমার ছেলে তো দোকানদারি করতে গেছিল, ওরে ক্যান গুলি করে মারল। আমার ছেলে তো রাজনীতি করত না, সে তো ফুটপাতে পাপোস বিক্রি করত। আমরা তো গরিব মানুষ। আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই'।
আজ দুপুর ২টা থেকে সায়েন্স ল্যাব এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। ছাত্রলীগ–যুবলীগ নেতাকর্মীরা ঢাকা কলেজের ফটকের সামনে আর আন্দোলনকারীরা সায়েন্স ল্যাব মোড়ের দিকে অবস্থান নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইট–পাটকেল নিক্ষেপ করে। রাত ৮টা পর্যন্ত সেখানে সংঘর্ষ চলে।
সংঘর্ষে ঢাকা কলেজের সামনেও এক যুবকের (২৫) মৃত্যু হয়েছে। তবে তার পরিচয় জানা যায়নি এখনও।