নিষেধাজ্ঞা ও দুর্যোগ কাটিয়ে সাগরে যাচ্ছেন জেলেরা
সরকারি ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা ও বৈরী আবহাওয়া কাটিয়ে সাগরে মাছ শিকারে যাচ্ছে কক্সবাজার উপকূলের জেলেরা। তবে বুধবার (২৪ জুলাই) সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া ট্রলারের সংখ্যা ছিল তুলনামূলক কম। আর যেসব ট্রলার বাঁকখালী নদীতে নোঙর করেছে, সেগুলো আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রওনা দেবে বলে জানিয়েছে জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতি।
বুধবার (২৪ জুলাই) বিকেলে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, অবতরণ কেন্দ্রের জেটিতে অবস্থান করছে এফবি মায়ের দোয়া, এফবি ছলিমা, এফবি আল্লাহ দান ও এফবি হুয়াইরা। এসব ট্রলারে অবস্থান করছেন প্রায় ৭০ জনের বেশি জেলে। এসব জেলের কেউ কেউ ট্রলারে বরফ তুলছেন, কেউ ড্রাম ও জাল তুলছেন, আবার অনেকেই খাদ্যপণ্য তুলছেন। তবে সবার চোখে-মুখে রয়েছে হাসি।
এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের জেলে দিদার আহমেদ বলেন, "৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা তারপর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া কাটিয়ে সাগরে যাব। দুপুরের মধ্যে ট্রলারে সব রসদ উঠে যাবে। তারপর সাগরে ইলিশ শিকারে রওনা হব। এখন খুবই খুশি লাগছে, সাগরে যেতে পারব বলে।"
আরেক জেলে রুস্তুম আলী বলেন, "সাগরে মাছ শিকারে যাওয়ার মতো আনন্দ আর কিছুতেই হতে পারে না। কারণ প্রায় ৬৬ দিন পর সাগরে যাচ্ছি। এখন মাছ ধরা পড়লে তা বিক্রি করে ট্রলারের মালিককে টাকা দিব। তারপর সেখান থেকে ট্রলার মালিক টাকা দিলে সংসারে হাসি ফুটাতে পারব।"
শুধু মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র নয়, বাঁকখালী নদীর মাঝির ঘাট, ৬নম্বর ঘাট, নুনিয়ারছড়া ও নাজিরারটেকে অবস্থান করছে শত শত মাছ ধরার ট্রলার। আর ট্রলারে অবস্থান করছেন হাজার হাজার জেলে। ট্রলারে সবকিছু ওঠানো শেষ। আজ সকালের মধ্যে সাগরে মাছ শিকারের জন্য রওনা হওয়ার কথা জানিয়েছেন ট্রলার মালিকরা।
ট্রলার মালিক ওসমান গণি টুলু বলেন, "নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মঙ্গলবার মধ্যরাতে সাগরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সাগর উত্তাল থাকায় ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) সাগরে মাছ শিকারে যেতে পারেনি জেলেরা। বুধবার (২৪ জুলাই) কিছু সংখ্যক জেলে সাগরে গিয়েছেন। আর বৃহস্পতিবার উপকূলে নোঙর করা সব ট্রলার সাগরে মাছ শিকারে যাবে বলে আশা করি।"
কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, "নিষেধাজ্ঞা ও বৈরী আবহাওয়া কাটিয়ে সাগরে যাচ্ছে মাছ ধরার ট্রলারগুলো। এখন সাগরে গিয়ে মাছ ধরা পড়লে তা এনে কক্সবাজার মৎস্য কেন্দ্রে বিক্রি করবে। যদি মাছ ধরা পড়ে তাহলে গেলো ৬৫ দিনের যে লোকসান তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। এখন সবাই আশাবাদী, সাগরে জাল ফেলতেই ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়বে।"