নিষেধাজ্ঞা এড়াতে টিকটককে আরও ৯০ দিনের সময় দিতে পারেন ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার (১৮ জানুয়ারি) এনবিসি নিউজের 'মিট দ্য প্রেস' অনুষ্ঠানে দেওয়া এক ফোন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তিনি ৯০ দিনের জন্য টিকটকের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারেন। সোমবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওভাল অফিসে যোগ দেওয়ার পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ট্রাম্প বলেন, '৯০ দিনের এই সময়সীমা দেওয়া হতে পারে, কারণ এটি যথোপযুক্ত। আমাদের বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।'
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একটি আইন স্বাক্ষর করেন, যা বাইটড্যান্সকে টিকটকের মার্কিন কার্যক্রম বিক্রি করতে বাধ্য করে। বিক্রয় না হলে অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হবে। তবে, বিক্রয়ের জন্য আইনি প্রক্রিয়া ও অগ্রগতি নিশ্চিত হলে প্রেসিডেন্ট ৯০ দিনের এককালীন সময়সীমা বাড়ানোর সুযোগ রাখতে পারেন।
এখন পর্যন্ত এমন কোনো আইনি চুক্তি প্রকাশ্যে আসেনি। বিশাল পরিমাণ অর্থ খরচ করে যদি কোনো ক্রেতা এগিয়ে আসে, তবেই বিক্রয়ের প্রক্রিয়া এগোতে পারে।
বাইডেন প্রশাসন অবশ্য বারবার জানিয়েছে, তারা টিকটক নিষিদ্ধে পাস হওয়া আইন কার্যকর করার পরিকল্পনা করছে না এবং এই দায়িত্ব ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছে। তবে, টিকটক শুক্রবার জানায়, হোয়াইট হাউসের আশ্বাস যথেষ্ট নয়। সুনির্দিষ্ট আইনি দিক ও পরিষেবা সরবরাহকারীদের বিষয়ে নিশ্চিয়তা না পাওয়া গেলে অ্যাপটি রোববার-ই বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারিন জ্যঁ-পিয়ের টিকটকের 'বন্ধ হওয়ার' পরিকল্পনাকে 'একটি স্টান্ট' হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'আমরা টিকটকের সাম্প্রতিক বিবৃতি দেখেছি। এটি একটি স্টান্ট। ট্রাম্প প্রশাসন সোমবার দায়িত্ব নেওয়ার আগে কোনো অ্যাপ বা কোম্পানির পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন নেই।'
টিকটক নিয়ে ট্রাম্পের বর্তমান নীতিমালা তার প্রথম মেয়াদের সময় নেওয়া অবস্থান থেকে ভিন্ন। তখন তিনি টিকটক ও চীনা অ্যাপ উইচ্যাট নিষিদ্ধের উদ্যোগ নিয়েছিলেন, যা আদালতে স্থগিত হয়েছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তিনি অ্যাপটির জনপ্রিয়তা এবং মার্কিন বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক বিবেচনা করে এই বিষয়ে নমনীয়তা দেখাচ্ছেন।
ট্রাম্প প্রশাসন সোমবার দায়িত্ব নেওয়ার পর টিকটকের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। এরই মধ্যে টিকটকের সিইও শু চিউ ট্রাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। অন্যদিকে, মার্কিন আইনপ্রণেতারা বাইটড্যান্সের চীনা সরকারের সঙ্গে সংযোগের বিষয়টি বিবেচনায় এনে অ্যাপের বিক্রয় বা নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিচ্ছেন।
এখন, টিকটকের ভবিষ্যৎ কীভাবে রূপ নেবে তা নির্ভর করছে ট্রাম্প প্রশাসনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ওপর।