‘মর্মান্তিক সহিংসতা’ ও ভিন্নমত ‘দমন’ বন্ধের আহ্বান জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানের
বাংলাদেশ সরকারকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের টার্গেট করা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার-প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, বাংলাদেশে চলমান 'মর্মান্তিক সহিংসতা' বন্ধ করতে হবে।
গত কয়েকদিন ধরে চলা সহিংসতা—যাতে পুলিশ সদস্যসহ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন—অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক এক বিবৃতিতে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি মানুষের জীবনের অধিকারকে সুরক্ষিত রাখার বাধ্যবাধকতা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, সপ্তাহান্তে বাংলাদেশে পুলিশ সদস্যসহ আরও অনেকে নিহত হয়েছেন। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলেন, ১৩ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৮০ জন নিহত হয়েছেন আন্দোলনকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সহিংসতায়। কর্তৃপক্ষ কারফিউ জারি ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ সীমিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিক্ষোভ করছেন হাজার হাজার মানুষ। এতে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে 'মর্মান্তিক সহিংসতা' বন্ধ করতে হবে উল্লেখ করেছেন তুর্ক।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, আজ 'মার্চ টু ঢাকা' কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের যুব শাখাকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে নামার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তুর্ক বলেন, 'আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে, এতে আরও প্রাণহানি হবে, আরও ব্যাপক পরিসরে ক্ষয়ক্ষতি হবে। রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও নিরাপত্তা বাহিনীকে জীবনের অধিকার সুরক্ষিত করার বাধ্যবাধকতা পূরণ, এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মতপ্রকাশের অধিকার সুরক্ষার জন্য আমি জরুরি ভিত্তিতে আহ্বান জানাচ্ছি।'
যারা সিনিয়র আছেন এবং যারা কমান্ড দেওয়ার জন্য দায়ী, তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহি গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তুর্ক বলেন, 'আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে স্পষ্ট করতে হবে যে, এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কোনো দায়মুক্তি দেওয়া যাবে না।'
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার আরও বলেন, 'শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ আন্দোলনে যারা অংশ নিচ্ছেন, তাদেরকে টার্গেট করা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে সরকারের।'
এছাড়া 'নির্বিচারে' আটক করা ব্যক্তিদের অবিলম্বে মুক্তি প্রদান, ইন্টারনেট পরিষেবা পুরোদমে চালু করা এবং অর্থপূর্ণ সংলাপের পরিবেশ সৃষ্টি করার আহ্বানও জানান তিনি।
ভলকার তুর্ক আরও বলেন, 'অতিরিক্ত বল প্রয়োগ, ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো এবং সহিংসতা উসকে দেওয়ার মাধ্যমে জনপ্রিয় এই ভিন্নমতকে দমন করার অব্যাহত প্রচেষ্টা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।'