বগুড়ায় মাঠে নেমেছে ট্রাফিক পুলিশ, চালু হয়েছে থানাও
ছোট পরিসরে হলেও আজ বগুড়ায় মাঠে নেমেছে ট্রাফিক পুলিশ। সাধারণ মানুষের দাবি, আইন শৃংখলা পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হওয়া জরুরি। গতকাল থেকে দৃশ্যমানভাবে মাঠে নেমেছে বগুড়ার সব পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও কয়েকদিন লাগবে।
গত ৫ আগস্ট বগুড়ায় বিভিন্ন স্থাপনায় তাণ্ডব শুরু হয়। সেদিনই সদর থানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। থানাগুলোতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে লুটপাট করা হয়েছে। সদর থানা থেকে ৩৮ টি অস্ত্র লুট হয়েছে। এরপর থেকে বগুড়া শহরের সব পুলিশকে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়। সদর থানা কিংবা ট্রাফিক পুলিশের সব সদস্যকেই নেওয়া হয়েছিল ব্যারাকে। যার কারণে জরুরি প্রয়োজনে জেলা সদরের কোনো পুলিশের কাছে সেবা পাওয়ার সুযোগ ছিল না।
গণঅভ্যুত্থানের আটদিন পরে আজ প্রথম মাঠে নেমেছে বগুড়ার ট্রাফিক পুলিশ। এতোদিন এই পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছিল শিক্ষার্থী-সাধারণ মানুষ।
দুপুরে সাতমাথায় কথা হয় রতন কুমান নামের এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের সাথে। তিনি বলেন, "কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর জেলায় পুলিশিং কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল না। এতোদিন শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ এই কাজ করেছেন। এটা আমাদের ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করছে।এখনো তারা রাস্তায় কাজ করছে। আমরা মাঠে নামার পর মানুষের ভালো রেসপন্স পাচ্ছি। পরিস্থিতি অচিরেই স্বাভাবিক হবে।"
জেলা পুলিশের একটি সূত্র বলছে, বগুড়ায় প্রথম দিনে (আজ) শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ৩০ জন ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে তারা দায়িত্ব পালন করছেন।
বগুড়ায় গতকাল থেকে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের গোয়েন্দা পুলিশের দপ্তরে সদর থানার কার্যক্রম চলছে। এখানে আভ্যন্তরীণ কাজ চলছে। বগুড়া সদর থানার উপপরিদর্শক আব্দুর রহিম বলেন, "অগ্নিসংযোগের কারণে সদর থানার সবকিছু ভস্মীভূত হয়েছে। সদর থানা থেকে ৩৮ টি অস্ত্র লুট হয়েছে। সেগুলো উদ্ধারে চেষ্টা করা হচ্ছে। গাড়িগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। বিকল্পভাবে সাধারণ মানুষকেও ছোট পরিসরে সেবা দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। আমরা জনবান্ধবন পুলিশিং করতে চাই।"
বগুড়ার সুশাসনের জন্য নাগরিক কমিটির সদস্য তাহমিনা পারভীন শ্যামলী বলেন, পুলিশ আধুনিক সমাজ ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ। গত এক সপ্তাহ ধরে তারা মাঠে নেই। এটি আমাদের নিরাপত্তার জন্য খুব শঙ্কার। রাস্তাঘাটে চলাচল করার জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভীতিকর পরিস্থিতি ছিল। থানায় পুলিশ কাজ করছে, ট্রাফিকরা রাস্তায় নেমে যানবাহন চলাচলে সহযোগিতা করছে; এটি খুবই আশাব্যঞ্জক। আমরা নিরাপদ নগরী চাই।
জেলার ১২ থানায় পরিপূর্ণভাবে কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বগুড়া পুলিশ সুপার জাকির হাসান। তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে পুলিশের কিছু গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি পুলিশের সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা হচ্ছে।