ডিএমপির ১০ শতাংশ কর্মকর্তা এখনও কাজে যোগ দেননি, বেশিরভাগ আওয়ামীপন্থী
ছাত্র-জনতার গণঅভূত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও শেখ হাসিনা ভারত পালানোর পরে অনেকেই পালিয়েছেন দেশ ছেড়ে। আবার কেউ কেউ দেশেই রয়েছেন আত্মগোপনে। এমন তালিকায় আছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কর্মকর্তারাও।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বেঁধে দেওয়া শেষ সময় ছিলো গতকাল (বৃহস্পতিবার)। ডিএমপির সকল কার্যক্রম শুরু হলেও এখনো কিছু কর্মকর্তা অনুপস্থিত রয়েছেন। কিন্তু সেই সময় পার হয়ে গেলেও এখনো ডিএমপির উর্ধ্বতন অন্তত ১০ শতাংশ কর্মকর্তারা অনুপস্থিত। সহকর্মীদের মতে, এদের সবাই আওয়ামীপন্থী।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছিলেন, "১৫ আগস্টের (বৃহস্পতিবার) মধ্যে চাকরিতে যোগদান না করলে ধরে নেওয়া হবে তারা চাকরিতে ইচ্ছুক নন।"
তবে বেশির ভাগ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকলেও এখনো কিছু কর্মকর্তাদের কক্ষের বাতি জ্বলছে না। গত বুধবার পর্যন্ত আওয়ামীপন্থী কিংবা ক্ষমতাচ্যুত সরকারঘেঁষা হিসেবে পরিচিত ডিএমপির ১০ শতাংশ কর্মকর্তা কাজে যোগ দেননি।
ডিএমপি সূত্র বলছে, অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) হারুন অর রশীদ, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, মেহেদী হাসান, সুদীপ কুমার চক্রবর্তীসহ অন্তত ১০ শতাংশ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কাজে যোগ দেননি। এরা ছাড়াও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার থেকে অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার ঊর্ধ্বতন পুলিশ সদস্যরাও এই তালিকায় রয়েছেন।
তবে উপপরিদর্শক ও পরিদর্শক পদমর্যাদার প্রায় শতভাগ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত রয়েছে। একই অবস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশেও। হারুন অর রশিদের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং আওয়ামী লীগের অফিসার বলে পরিচয় দেয়া অনেক এডিসি ও ডিসি পদমর্যাদার কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবারও কাজে যোগ দেননি।
ডিএমপির এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা টিবিএসকে জানান, ডিএমপি সদর দপ্তরের ক্রাইম বিভাগ ও প্রশাসন বিভাগসহ দুই-একটি ইউনিটের সদস্যরা পুরোদমে অফিস করছেন। বাকিদের কক্ষে তালা ঝোলানো দেখা যায়। অনেকের ফোনও বন্ধ। তবে থানাগুলোতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত পুলিশ সদস্য কাজে যোগ দিয়েছেন।
এদিকে থানাগুলো চালু হলেও তেমন মামলা হয়নি। তবে বিভিন্ন নিখোঁজ, জমিদখল, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ভাঙচুর ও দোকান লুটপাট সংক্রান্ত অভিযোগ আসছে থানাগুলোতে।
কর্মকর্তাদের উপস্থিত ও অনুপস্থিত নিয়ে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, "অনেকেই কাজে ফিরছেন। আমরা আশাবাদী, বাকিরাও দ্রুতই কাজে ফিরবেন।"
আরেকটি সূত্র বলছে, পলাতক পুলিশ কর্মকর্তারা রোববারের মধ্যে না ফিরলে তাদের নিখোঁজ মনে করে সাধারণ ডায়েরি করতে পারবে পুলিশ। এছাড়া দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকলে, ফৌজদারী মামলায় অভিযুক্ত হলে তাদের সাময়িক বরখাস্তও করা হতে পারে।