সব ধর্ম ও মতাদর্শের মানুষ নিয়ে ‘রেইনবো জাতি’ গড়ে তুলব: মির্জা ফখরুল
দেশের সকল ধর্ম ও মতাদর্শের মানুষদের নিয়ে দলের আকাঙ্ক্ষার 'রেইনবো জাতি' গড়ে তুলবেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
২০২২ সালের শেষের দিকে বিএনপি (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল) ২৭ দফার 'রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত রূপরেখা'র অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্তিমূলক রেইনবো নেশন গঠনের কথা জানিয়েছিল।
পরের বছরের জানুয়ারিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, 'দেশের সব মানুষের ধর্ম, ভাষা ও সংস্কৃতিকে প্রাধান্য বা সম্মান জানানোর জন্য রেইনবো নেশন। সে জায়গা থেকে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদকে মূলে রেখে নতুনভাবে রেইনবো নেশনের কথা বলা হচ্ছে।'
রেইনবো নেশনের ধারণা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসেছে। ১৯৯৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পর বর্ণবৈষম্য-উত্তর দেশকে বর্ণনা করার জন্য আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু রেইনবো নেশন শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমি আশাবাদী। কিছু সংখ্যক সন্ত্রাসী কোনো দলের নয়। যতই চেষ্টা করুক, তারা এ দেশের সম্প্রীতি বন্ধন, সৌহার্দ্য নষ্ট করতে পারবে না।
'এবারও তা প্রমাণিত হয়েছে, অনেক চেষ্টা করে সম্প্রীতি-সৌহার্দ্য বিনষ্ট করতে পারেনি। সকল ধর্মের ও মতের মানুষদের নিয়ে আমাদের আকাঙ্ক্ষার রেইনবো জাতি গড়ে তুলব।'
অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর যে সমস্যা সেগুলোকে নিজের সমস্যা বলে মনে করি মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, 'একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধে যে চেতনা নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলাম, আসুন '২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আবার সে চেতনাকে পরিস্ফুটিত করি। সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক দেশ নির্মাণ করি।'
হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেন, 'বাংলাদেশের বর্তমান ক্লান্তিকালে আমরা দেশের বিরাজিত পরিস্থিতি তুলে ধরেছি। আমরা শান্তি চাই, স্বস্তি চাই, আমরা বাঁচতে চাই।'
'আমরা গণতান্ত্রিকভাবে নানা দলের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের কথাগুলো এ দেশের যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন তাদের সামনে তুলে ধরতে চাই,' বলেন তিনি।
বাংলাদেশ হিন্দু পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক কালবেলার সম্পাদক সন্তোষ শর্মা বলেন, 'আমরা দাবি তুলে ধরেছি, দল ক্ষমতায় গেলে বিএনপি এটি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মহাসচিব। আমরা এখন থেকে অতীতের সব ভুলে গিয়ে সবাই একসঙ্গে কাজ করব।'
মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।