কঙ্কাল ব্যবসা, ইন্টার্নদের নির্যাতনসহ নানা অভিযোগে রামেক ছাত্রলীগের ১৯ সদস্য বহিস্কার
কঙ্কাল ব্যবসা, হোস্টেলের সিট দখল, র্যাগিং, চাঁদাবাজি, অস্ত্র বহন, মাদক সেবন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নির্যাতনসহ বিভিন্ন অসদাচরণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে তাদের ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এছাড়া, সজিব আকন্দ নামে আরেক শিক্ষার্থীকে তিরস্কার এবং অভিভাবকের উপস্থিতিতে মুচলেকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত রামেকের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত হয়।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ওই ২০ শিক্ষার্থীর সবাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।
এক বছরের জন্য শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- এমবিবিএস ৬১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী বখতিয়ার রহমান, আরাফাত জুলফিকার ডেভিড, নকিবুল ইসলাম শাকিল, ফারিয়া রেজোয়ানা নিধি, নাফিউ ইসলাম সেতু, ৬৩তম ব্যাচের শেখ সাকিব ও সোহম বিজয়।
৬ মাসের জন্য শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- ৬১তম ব্যাচের রাশিদ মোবারক, ৬২তম ব্যাচের হাসিবুল হাসান শান্ত, আশিকুর রহমান, তরিকুল ইসলাম, রাশেদুল ইসলাম, শোয়েব আকতার শোভন, জুহাইর আঞ্জুম অর্নব, মাহফুজুর রহমান, ৬৩তম ব্যাচের কাজী হানিফ, পূর্ণেন্দু বিশ্বাস, ৩১তম বিডিএস ব্যাচের নূর এ জান্নাত কিন্তু এবং ৩৩তম বিডিএস ব্যাচের ফারদিন মুনতাসির।
এছাড়া, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করার অপরাধে ১২ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৬ শিক্ষককে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাকি ছয়জনকে বদলির জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
রামেকের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খন্দকার ফয়সল আলম বলেন, 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে কলেজের ৩৪ জন শিক্ষক ও ৪৪ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনা হয়। এর প্রেক্ষিতে দুটি তদন্ত কমিটি করে অভিযোগের তদন্ত করা হয়। তদন্তে যাদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল।'
অধ্যক্ষ আরও বলেন, 'যারা অভিযোগ তুলেছেন, তারা আমার শিক্ষার্থী। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারাও আমার শিক্ষার্থী। তাই নির্মোহভাবে অভিযোগগুলোর তদন্ত করা হয়। তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি। এই সুপারিশ অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় তোলা হলে সর্বসম্মতক্রমে সবাই তাদের শাস্তির ব্যাপারে একমত হন।'