হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’: বাংলাদেশ
হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ভারতের সাম্প্রতিক বিবৃতি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ এক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, সরকার এ ধরনের অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও অবাঞ্ছিত বলে মনে করছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ সোমবার (১৪ অক্টোবর) বলেছে, 'আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আশ্বস্ত করেছে যে বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিচিতি সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর।'
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, 'গত ১২ অক্টোবর এক বিবৃতিতে উৎসবের শুভলগ্নে হিন্দুসহ সব সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও তাদের উপাসনালয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অনুরোধ জানায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।'
একই বিবৃতিতে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, '... এগুলো মন্দির ও দেবতাদের পবিত্রতা ক্ষুণ্ন করার একটি পরিকল্পিত প্রবণতা...'।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'যে কয়েকটি অনাকঙ্খিক ঘটনার খবর পাওয়া গেছে, সরকার অনতিবিলম্বে সেগুলোর ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং উৎসবকালীন সময়ে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।'
আরও বলা হয়েছে, 'সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বাংলাদেশের উদারতা ও গণতন্ত্রের দীর্ঘকালীন বৈশিষ্ট্য, যা সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে।'
আরও বলা হয়েছে, 'সরকার দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে প্রত্যেক ব্যক্তিরই কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই নিজ নিজ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করার অধিকার রয়েছে।'
সারা বাংলাদেশে ৩২ হাজারেরও বেশি পূজামণ্ডপে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা পালনের মাধ্যমে এটি প্রমাণিত হয়েছে।
গত ১০ অক্টোবর বাংলাদেশের সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরের সোনার মুকুট চুরির ঘটনা উল্লেখ করে মন্ত্রণালয় জানায়, 'নিশ্চিত হওয়া গেছে যে প্রধান পুরোহিত দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত তার নিয়মিত পূজা সম্পন্ন করেছেন এবং ওই সময় পর্যন্ত মুকুটটি মন্দিরের ভেতরে অক্ষত ছিল।'
মন্ত্রণালয় জানায়, 'পুরোহিত ও মন্দিরের কর্মীরা কেন এত মূল্যবান একটি জিনিস অরক্ষিত ও নিরাপত্তাহীনতায় ফেলে রেখেছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চুরির ঘটনায় ইতোমধ্যেই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।'
সরকার জানিয়েছে 'সব নাগরিকের, বিশেষ করে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বাংলাদেশ সরকার একান্ত কর্তব্য বলে মনে করে।'
সরকার আরও জানিয়েছে, 'পরিচয়, ধর্ম, ধর্ম নির্বিশেষে প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার সমুন্নত রাখার বিষয়টি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে স্বীকৃত হওয়া উচিত।'