কুমিল্লায় ছাত্র আন্দোলনে নিহত দুইজনের মরদেহ উত্তোলন
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত দুজনের মরদেহ উত্তোলন করেছে পুলিশ। মামলার তদন্তের জন্য আদালতের নির্দেশে শনিবার (২৬ অক্টোবর) তাদের মরদেহ কবর থেকে তোলা করা হয়।
তারা হলেন— দাউদকান্দির সুকিপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে মো. রিফাত (১৬)। রিফাত উপজেলার সুন্দলপুর হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। অপরজন দিনমজুর মো.বাবু মিয়া (২৩)। তিনি উপজেলার তুজারভাঙ্গা গ্রামের অটোরিকশা চালক আব্দুল মান্নানের ছেলে।
গত ৪ আগস্ট দাউদকান্দিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রিফাত বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। ওইদিন রাতেই মারা যান তিনি। পরদিন রিফাতের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করে পরিবার।
এ ঘটনার ১৪ দিন পর ১৮ আগস্ট রিফাত হোসেনের মামা পরিচয়ে আব্দুর রাজ্জাক ফকির বাদী হয়ে দাউদকান্দি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর গত ১ সেপ্টেম্বর রিফাত হত্যার ঘটনায় কুমিল্লার আদালতে আরেকটি হত্যা মামলা করেন তার মা নিপা বেগম। মামলাটির তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
দুই মামলাতেই সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, উপজেলা চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী সুমন, পৌর মেয়র নাইম ইউসুফ সেইন-সহ ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের চার শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
অপরদিকে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিকেলে দাউদকান্দি মডেল থানার সামনে দিনমজুর মো. বাবু মিয়া (২৩) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাকে দাফন করা হয়। নিহত দিনমজুর বাবুর প্রতিবেশী লিটন আহম্মেদ পাভেল বাদী হয়ে ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না থাকায় আদালতের নির্দেশে তাদের দুজনের মরদেহই উত্তোলন করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। মরদেহ উত্তোলনের সময় উপস্থিত ছিলেন, দাউদকান্দি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দাউদকান্দি মডেল থানার উপপরিদর্শক হারুনুর রশিদ।
উপপরিদর্শক হারুনুর রশিদ বলেন, "তখন ময়নাতদন্ত করার অবস্থা ছিল না। তাই লাশ দাফন করেছিল পরিবার। এখন আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য ইতোমধ্যে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গেও পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে আবার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।"
দাউদকান্দি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম বলেন, "আদালতের নির্দেশে আইনি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর আবার মরদেহ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালিত হবে।"