মুক্তিযোদ্ধা ও কৃষকলীগ নেতা কানুকে হেনস্তার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কেন্দ্রীয় কৃষকলীগ নেতা আব্দুল হাই কানুকে জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) চৌদ্দগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন চৌদ্দগ্রামের কুলিয়ারা গ্রামের আবদুল হক মজুমদারের ছেলে ইসমাইল হোসেন মজুমদার, সুলতান আহমেদ মজুমদারের ছেলে জামাল উদ্দিন মজুমদার, এছহাক ভূঁইয়ার ছেলে ইলিয়াছ ভূঁইয়া, নাঙ্গলকোটের রায়কোট গ্রামের ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে আবুল কালাম আজাদ এবং চাঁদপুর সদরের মাইশদী গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে আবদুল্লাহ সাজ্জাদ।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আক্তারুজ্জামান বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
'এ ঘটনায় আব্দুল হাই কানু কোনো মামলা করেননি,' জানান তিনি।
আব্দুল হাইকে রোববার (২২ ডিসেম্বর) কয়েকজন ব্যক্তি জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়ন ইউনিয়নের লুদিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা কানু আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
জানা গেছে, আব্দুল হাই কানু একটি হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি। তার বিরুদ্ধে সর্বমোট নয়টি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি মামলাই চলমান।
মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্তার ঘটনার পরদিন তীব্র নিন্দা জানায় অন্তর্বর্তী সরকার। সোমবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে নিন্দা জানিয়ে বলা হয়, ঘটনাটি তদন্তে ও দোষীদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আবদুল হাই কানুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে এলাকার অনেকের ক্ষোভ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন দাবি করেন, পারিবারিক দ্বন্দ্বে হেনস্তার ঘটনা ঘটেছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
'কানু এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছেন। তার প্রতি অনেকের ক্ষোভ আছে,' বলেন তিনি।
আবদুর রহমান নামক এক প্রবীণ বাসিন্দা কানুর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনেছেন।
'আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আমার ভাইয়ের থেকে ২৬ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করেন। এমনকি আমার ঘর নির্মাণের সময় আমার থেকেও সাত লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।'
'তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। মানুষের অনেক ক্ষোভ তার ওপর,' বলেন তিনি।
সাবেক ইউপি সদস্য ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আবদুল হক বলেন, 'কানু গত ১৭ বছরে এলাকায় সন্ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করেছেন।'
'একাধিক হত্যা, বাড়িঘর ভাঙচুর এবং চাঁদাবাজির সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। স্থানীয়রা পূর্বের ক্ষোভ থেকে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন,' বলেন তিনি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল হাই কানু বলেন, 'আমার বিরুদ্ধে ৯টি মামলা হয়েছে আওয়ামী লীগ আমলে।'
'আর এসব মামলা করিয়েছেন সাবেক রেলমন্ত্রী ও সাবেক স্থানীয় সংসদ সদস্য মুজিবুল হক,' তিনি আরও বলেন।