‘মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, কিংবা পুলিশদেরকে না মারা হলে বিপ্লবটা এত সহজে অর্জিত হতো না’: সমন্বয়ক হাসিবুল
'যদি মেট্রোরেলে আগুন না দেওয়া হতো, যদি পুলিশদের না মারা হতো তাহলে এই বিপ্লবটা এত সহজে অর্জিত হতো না। ফ্যাসিবাদের পতন নিশ্চিত করা যেত না'—সম্প্রতি বেসরকারি টেলিভিশন ডিবিসির 'প্রযত্নে বাংলাদেশ' টকশোতে অংশ নিয়ে এমন মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম।
শনিবার ডিবিসির নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে অনুষ্ঠানটির ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়। টকশো'র মূল প্রতিপাদ্য ছিল 'জাতীয় ঐক্যে কতটা চ্যালেঞ্জ'। টকশোতে বক্তা হিসেবে হাসিবুল ইসলামের পাশাপাশি আরও ছিলেন বিএনপি নেত্রী নিলুফার চৌধুরী মনি।
অনুষ্ঠানের বিরতির পর উপস্থাপিকা ঝুমি রহমান, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বিতর্কে হাসিবুল ইসলামকে প্রশ্ন করেন—রাষ্ট্রপতির কাছে যখন শপথ নেওয়া হয়েছিল, তখন কী আপস হয়নি?
এর উত্তরে হাসিব বলেন, 'দেখুন, তখন কিন্তু আপস হয়নি। আমরা কিন্তু বলিনি যে, আমাদের যে বিপ্লবটা, যে অভ্যুত্থানটি হয়েছে সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে তা শেষ হয়ে গেছে। আমাদের যে এক দফার ঘোষণা, সেই ঘোষণাপত্রে আমরা ফ্যাসিবাদের পতন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার পুরোপুরি বিলোপসহ তিনটি বিষয় উল্লেখ করেছিলাম। তখন শুধু ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছিল। বাকি আরও দুটো, তার মানে আমাদের লড়াইটা শেষ হয়ে যায়নি। আমাদের বিপ্লবটা চলমান।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা এটাকে বিপ্লব বলছি বা গণঅভ্যুত্থান, যাই বলি না কেন, এটা কোনো সাংবিধানিক নিয়ম মেনে হয়নি, আইন মেনে হয়নি। আইন যদি মানতে যেতাম, তাহলে কিন্তু এই বিপ্লবগুলো হতো না। যদি মেট্রোরেলে আগুন না দেওয়া হতো, যদি পুলিশদের না মারা হতো তাহলে এই বিপ্লবটা এত সহজে অর্জিত হতো না। ফ্যাসিবাদের পতন নিশ্চিত করা যেত না। এখানে কিন্তু নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে, পৃথিবীর সকল বিপ্লবই সংবিধান বা নিয়মের বাইরে যেয়ে হয়েছে। এ কারণে আইনের বাইরে যেয়ে বা সাংবাধানিক পদ শূন্য হবে এরকম কথা বিপ্লব বা অভ্যুত্থানের ক্ষেত্রে কতটা যৌক্তিক সেটা আমার কাছে মনে হচ্ছে না।'
বিএনপিকে উদ্দেশ করেও বেশ সমালোচনা করেন এই সমন্বয়ক। তিনি বলেন, 'যদি বিএনপি গত ১৫ বছরে সঠিকভাবে তাদের সক্ষমতা দেখাতে পারত, তাহলে এতদিন ধরে ফ্যাসিজম এভাবে দেশের মানুষের ওপর নির্যাতন চালাতে পারত না।'
তিনি বলেন, 'আমরা আবেগতাড়িত হয়ে এ আন্দোলন করেছি বলেই ফ্যাসিজমের পতন হয়েছে। সুতরাং এখনও আমরা আপোষহীন হয়ে চলতে চাই। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের প্রশ্নেও আমরা আপোষহীন থাকতে চাই। সংবিধানের পদের শূন্যতা, কিংবা রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হবে এ ধরনের আলাপ বাংলাদেশের জনগণ মানতে চাচ্ছেন না। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ এখন বাংলার মানুষের প্রাণের দাবি হয়ে উঠেছে'।