বঙ্গোপসাগরে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীনের নিজস্ব স্বার্থ রয়েছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাংলাদেশ ছাড়াও বঙ্গোপসাগরে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীনের গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ রয়েছে বলে মনে করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। আর এই অঞ্চলে দেশ তিনটির নিজস্ব স্বার্থের ফলে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ পরিস্থিতির শিকার হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
আজ (শনিবার) ঢাকার একটি হোটেলে বে অব বেঙ্গল কনভারসেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি বিশ্বের অন্যান্য দেশে এবং এর সম্পদের জন্য সুবিধা দেয়।"
একইসাথে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারত ও চীন কেন প্রত্যাশিত উপায়ে এগিয়ে আসছে না তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন তৌহিদ হোসেন। সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যায় রোহিঙ্গা সংকটের ক্ষেত্রে শুধু বাংলাদেশ নয়, এই অঞ্চল এবং এর বাইরেও একটি সম্ভাব্য হুমকি রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, "আলোচনার প্রক্রিয়ার শেষে কোনো ফলাফল নেই। আমি মনে করি না যে, এটি (রোহিঙ্গা ইস্যু) খুব দ্রুত এবং সহজে সমাধান হতে যাচ্ছে।"
বাংলাদেশ বর্তমানে কক্সবাজার ও ভাসানচরে ১৩ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে। আলোচনায় রোহিঙ্গা তরুণদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ নিয়েও কথা বলেন তৌহিদ হোসেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "(রোহিঙ্গা) সমস্যার সমাধান না হলে এটি বাকি বিশ্বের জন্য একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। একইসাথে সংকটটি সমাধানে বাংলাদেশ তার প্রধান প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছ থেকে প্রত্যাশিত মাত্রায় সমর্থন পায়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তৌহিদ হোসেন বলেন, "প্রশ্ন আসে, চীন কেন এই সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থেকে এগিয়ে আসছে না? কারণ বঙ্গোপসাগরে চীনের প্রবেশাধিকারের জন্য মিয়ানমার খুবই গুরুত্বপূর্ণ।"
উপদেষ্টা আরও বলেন, "একইভাবে ভারত মনে করে কালাদান প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ এবং এই প্রকল্পের জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে।" তাই বাংলাদেশ প্রতিযোগিতামূলক ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের আবর্তে আটকা পড়েছে বলে মনে করেন তিনি।
বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন (বিওবিসি) ২০২৪-এর তৃতীয় সংস্করণটি আয়োজন করেছে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস)। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সিজিএসের চেয়ারম্যান মুনিরা খান ও সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।
জিল্লুর রহমান বলেন, "বঙ্গোপসাগর সম্মেলনের তৃতীয় সংস্করণটি সিজিএস আয়োজিত এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় আয়োজন। এবারের সম্মেলন 'এ ফ্র্যাকচারড ওয়ার্ল্ড' এ বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশ থেকে আসা ২০০ জন বক্তা, ৩০০ প্রতিনিধি এবং ৮০০ অংশগ্রহণকারী শ্রোতা রয়েছে।"