রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুটবল খেলায় স্লেজিং করা নিয়ে সংঘর্ষ, শিক্ষক-সাংবাদিকসহ আহত অন্তত ৩০
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলা শেষে স্লেজিং (কটু কথা) করাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অ্যাকাডেমিক ভবনের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ কামাল স্টেডিয়ামে মার্কেটিং ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রথম দফায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম জানান, 'ফুটবল খেলা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছি।'
রাত সাড়ে নয়টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত ক্যাম্পাসজুড়ে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
আহতদের মধ্যে শিক্ষক মাহফুজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি মাথায় আঘাত পেয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
অন্যদিকে আহত সাংবাদিক আবু সালেহ শোয়াইব বণিক বার্তা পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি। এছাড়া, দুই বিভাগের অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাঠে উত্তেজনার পর বিকেল থেকে উভয় বিভাগের শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। পরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অ্যাকাডেমিক ভবনে মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং দুই বিভাগের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করলেও তারা ব্যর্থ হন।
সন্ধ্যা পৌনে আটটার দিকে দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টের রাউন্ড-১৬-এ মার্কেটিং বিভাগ ও আইন বিভাগের খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মার্কেটিং বিভাগ ১-০ গোলে জয়ী হয়।
খেলা চলাকালে উভয় পক্ষের দর্শক স্টেডিয়ামে অবস্থান করছিলেন। গোল হওয়ার একপর্যায়ে উভয় পক্ষ একে অপরকে 'ভুয়া' বলে স্লোগান দিলে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
খেলা শেষে স্টেডিয়াম গেটে আইন ও মার্কেটিং বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী তর্কে জড়ালে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
এ সময় আইন বিভাগের শিক্ষক মাহফুজুর রহমান মাথায় ইটের আঘাত পেয়ে আহত হন। পরে, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা একটি মিছিল বের করেন। মিছিলের ভিডিও ধারণ করতে গেলে সাংবাদিক আবু সালেহকে মারধর করে মুঠোফোনের ভিডিও ডিলিট করতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. সাঈদা আঞ্জু জানান, তিনি আহত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে রয়েছেন। 'আমাদের শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন,' বলেন তিনি।
অন্যদিকে মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নুরুজ্জামানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।