‘যদি দুর্নীতির পাহাড় থেকে জনগণের সম্পদ ফিরিয়ে দিতে না পারি, তবে কেমন বিপ্লব করেছি?’: দেবপ্রিয়
বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর "শ্বেতপত্র" তৈরির জন্য গঠিত কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন আগামী রোববার (১ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং অর্থনীতিতে অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
আজ বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) অর্থনৈতিক প্রতিবেদক ফোরাম (ইআরএফ) এবং রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) আয়োজিত "বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং ওপেন বাজেট সার্ভে ২০২৩-এর ফলাফল" বিষয়ক সেমিনারে এ তথ্য জানিয়েছেন ড. দেবপ্রিয়।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও জানান, প্রতিবেদনটির ফলাফল ২ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করা হবে।
সেমিনারে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ এখনো কেন বাজেয়াপ্ত করা হয়নি।
তিনি বলেন, "যদি আমরা দুর্নীতির পাহাড় থেকে জনগণের সম্পদ ফিরিয়ে দিতে না পারি, তবে আমরা কেমন বিপ্লব করেছি?"
তিনি আরও বলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারলে কর সংগ্রহে ইতিবাচক পদক্ষেপ আসবে ।
দাতা সংস্থা ও বিনিয়োগকারীদের সন্দেহের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "অনেক বড় প্রকল্পে দাতা সংস্থা ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা অর্থায়ন করেছেন। তারা উদ্বিগ্ন, এই প্রকল্পগুলো চলবে কি না। তারা জানতে চান, আগামী দিনে বাংলাদেশ কীভাবে বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে।"
জানুয়ারিতে দাতা সংস্থা ও সরকারের মধ্যে একটি বৈঠকের প্রস্তাব দিয়ে দেবপ্রিয় আগামী দুই মাসের মধ্যে "ফোরাম ফর ইনক্লুসিভ অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট" নামে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরির সুপারিশ করেন।
তিনি বলেন, "এই ফোরাম তৈরি করে দাতা ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব। পাঁচটি বিষয়ে অগ্রাধিকার দিতে হবে, যার প্রথমটি হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। অন্য বিষয়গুলো হলো– ব্যক্তিগত বিনিয়োগের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা, জ্বালানি সংকট সমাধান, সরকারি অর্থায়নের প্রতিবন্ধকতা দূর করে দ্রুত প্রকল্প সম্পন্ন করা এবং সঠিকভাবে কর সংগ্রহ নিশ্চিত করার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।"
ড. দেবপ্রিয় আরও বলেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে সরকারের লক্ষ্য পূরণ হবে না।
সরকার এখন পর্যন্ত জনগণকে আশ্বস্ত করতে কী করেছে এবং আগামী ছয় মাসে কী করবে, সেই বিষয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা উচিত বলে জানান তিনি।