দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিএসআর খাতে বরাদ্দ, খরচ ঠিকভাবে হিসাব করা হয়না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিএসআর (কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি) খাতে বরাদ্দ এবং খরচের হিসাব ঠিকমতো করা হয় না বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে আয়োজিত 'উদ্যোক্তা-এমপাওয়ারিং এন্ট্রাপ্রেনিউরস' প্রকল্পের সমাপনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, "সিএসআরের অ্যামাউন্টা (পরিমাণ) ঠিকমতো হিসাব করা হয় না। প্রফিট থেকে যে অ্যামাউন্টটা বরাদ্দ করা হয়, তার পারসেন্টেজটাও ঠিকমতো হিসাব করা হয় না। পাশের দেশ ভারতে এটি ৩ শতাংশ হারে বরাদ্দ থাকে।"
তিনি বলেন, "এই টাকা যেভাবে ব্যয় করা হয়, সেটাও দেখা যায় প্রতিষ্ঠানগুলোর আত্নপ্রচারে ব্যবহার করা হচ্ছে। কারা সবচেয়ে বেশি ব্যয় করবে সিএসআরে? যারা সবচেয়ে বেশি প্রফিট করে। সবচেয়ে বেশি প্রফিট করে টেলিকম কোম্পানিগুলো। সবাই জানে, তারা কীভাবে সিএসআর করে।"
তিনি আরও বলেন, "আমাদের দেশ গঠনে সিএসআর একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যেখানে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।" এজন্য শেভরনকেও সিএসআরে ব্যয় করার অনুরোধ জানান তিনি।
দেবপ্রিয় শেভরনের উদ্দেশ্যে বলেন, "দেশের ৬০ ভাগ গ্যাসের সরবরাহ শেভরনের কাছ থেকে আসে। বঙ্গোপসাগরের ডিপ সি ড্রিলিং এর কাজে শেভরন অংশ নিক, এটা আমরা আশা করি।"
শেভরন বাংলাদেশের অর্থায়নে পাঁচ বছর মেয়াদী উদ্যোক্তা প্রকল্পটি সিলেট অঞ্চলে বাস্তবায়ন করেছে অলাভজনক সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট এনভায়রনমেন্ট (আইডিই), বাংলাদেশ।
আইডিএ'র প্রকল্পের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের ক্ষমতায়ন
শেভরন বাংলাদেশের কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্সের ডিরেক্টর মোহাম্মদ ইমরুল কবির বলেন, "শেভরন তিন দশক ধরে এদেশের এনার্জি সিকিউরিটি (জ্বালানি নিরাপত্তা) নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্য, শিক্ষা, মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও কাজ করছে। তারই একটা অংশ এই প্রকল্প।"
আইডিই উপস্থাপিত প্রকল্পের ফলাফলে বলা হয়, ইকোনোমিক্যালি (অর্থনৈতিকভাবে) এমপাওয়ার (ক্ষমতায়ন) করার জন্য প্রকল্পের মাধ্যমে ১১০টি কো-অপারেটিভ ডেভেলপ করা হয়েছে। যাদের আওতায় ১,০০০ ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তা তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সিলেট এবং হবিগঞ্জের ৪০,৫০০ মানুষ এ প্রকল্পের সুবিধাভোগী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন।
আইডিই জানায়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৩৫ শতাংশ থাকলেও বাস্তবে সেটা ৫৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। তবে, ৯৩ শতাংশ উদ্যোক্তা প্রকল্পের আওতায় আয় বৃদ্ধিমূলক কাজে সফল হলেও বাকি ৭ শতাংশ সফল হতে পারেনি।
সফল হওয়া এক উদ্যোক্তা রোমানা আক্তার; তিনি কোয়েল পাখি পালন করেন। ৫০০ পাখি দিয়ে খামার শুরু করলেও এই উদ্যোক্তার খামারে এখন ২,৫০০ পাখি রয়েছে।