৯ দিনে ভারত থেকে এলো প্রায় ১ হাজার টন চাল; লোকসানের আশঙ্কা আমদানিকারকদের
দেশের বাজারে চালের পাইকারি দামের চেয়ে ভারত থেকে আমদানি করা চালের দাম বেশি পড়ছে। এতে আমদানিকারকেরা লোকসানের আশঙ্কা করছে।
যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গত ৯ দিনে ভারত থেকে এক হাজার ৩০ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের বাজারে চালের পাইকারি ও খুচরামূল্য কম। এদিকে আমদানিমূল্য বেশি পড়ায় চাল আমদানিতে অনীহা দেখা যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
আমদানিকারকরা জানান, চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার ভারত থেকে মোটা চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে বিনা শুল্কে সেদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে এসব চাল আমদানি করতে হবে। কিন্তু দেশের বাজারে পাইকারি দামের তুলনায় ভারতের বাজার থেকে আমদানি করা চালের দাম বেশি পড়ছে। এতে লোকসানের মুখে পড়ার শঙ্কায় চাল আমদানিতে আগ্রহ হারাচ্ছে আমদানিকারকরা।
বেনাপোল স্থলবন্দর ও কাস্টমস হাউস সূত্রে জানা গেছে, ১৮ থেকে ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩৩টি ট্রাকে ভারত থেকে মোট এক হাজার ৩০ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৭ নভেম্বর সর্বশেষ আমদানি হয়েছে ১০৫ মেট্রিক টন স্বর্ণা (মোটা) চাল।
যশোরের শার্শা উপজেলার চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান অর্ক ট্রেডিং দুই হাজার মেট্রিক টন আতপ ও তিন হাজার মেট্রিক টন সেদ্ধ মোটা চাল আমদানির অনুমোদন পেয়েছে। এর মধ্যে ১০০ মেট্রিক টন সেদ্ধ স্বর্ণা চাল ইতোমধ্যে এই প্রতিষ্ঠান আমদানি করেছে। যার প্রতি কেজি আমদানিমূল্য পড়েছে ৫১ টাকা। অন্যান্য খরচ দেড় থেকে দুই টাকা। অর্থাৎ ৫৩ টাকা প্রতিকেজির দাম পড়েছে। অথচ দেশের বাজারে এই স্বর্ণা চাল ৫০ টাকা কেজি পাইকারিতে বেচাকেনা হচ্ছে।
অর্ক ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মফিজুর রহমান বলেন, "৫৩ টাকা কেজি দরে মোটা চাল আমদানি করেছি। পরে দেখি দেশের বাজারে মোটা চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকা কেজি পাইকারি ও খুচরা বেচাকেনা হচ্ছে। বাধ্য হয়ে কেজিতে এক টাকা লোকসানে ৫২ টাকায় চাল বিক্রি করতে হয়েছে। যে কারণে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে ৫ হাজার টন চাল আমদানি করা হয়তো সম্ভব হবে না।"
যশোরের স্থানীয় চালের আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুধবার সেদ্ধ স্বর্ণা মোটা চাল ৫০ টাকা পাইকারি দামে আড়তে বেচাকেনা হচ্ছে।
নাভারণ বাজারের সবচেয়ে বড় চালের আড়ত চৌধুরী রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী রাশেদ চৌধুরী বলেন, "বুধবার হাইব্রিড মোটা চাল ৪৯ টাকা ও স্বর্ণা মোটা চাল ৫১ টাকা কেজি পাইকারিতে বিক্রি হয়েছে। নতুন ধানের চাল বাজারে আসতে শুরু করেছে। এখন থেকে চালের দাম কমতে থাকবে। যদিও এবার অতিবৃষ্টির কারণে চালের উৎপাদন কমেছে। সে কারণে চাল আমদানির প্রভাবও বাজারে থাকবে।"
বেনাপোল চেকপোস্ট উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধকেন্দ্রের উপসহকারী কর্মকর্তা শ্যামল কুমার নাথ জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৯ দিনে ৩৩ ট্রাকে এক হাজার ৩০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। আরও চালের চালান বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। আমদানি এভাবে অব্যাহত থাকলে বাজারে চালের দাম কমে আসবে বলে জানান তিনি।