'কেমন পুলিশ চাই' জরিপ: পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার পক্ষে ৮৯.৫% মানুষ
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে ৩ ডিসেম্বর প্রকাশিত 'কেমন পুলিশ চাই' শীর্ষক জরিপের ফলাফল থেকে দেখা যায়, ৮৯.৫ শতাংশ উত্তরদাতা পুলিশকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের অবসান চেয়ে মত প্রকাশ করেছেন এবং ৯৫ শতাংশ উত্তরদাতা ভুয়া ও গায়েবি মামলা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।
জরিপে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি উত্তরদাতা পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করার জন্য মতামত দিয়েছেন। এর পর দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল নিরপেক্ষ পুলিশ এবং তৃতীয় অবস্থানে ছিল দুর্নীতিমুক্ত পুলিশ চাওয়ার মতামত।
এই বছরের ৩১ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে পরিচালিত এই জরিপে মোট ২৪ হাজার ৪৪২ জনের মতামত পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে প্রায় ৯৫ শতাংশ উত্তরদাতা পুরুষ ছিলেন। এর মধ্যে, ১৮ থেকে ৪৪ বছরের ব্যক্তিদের অংশগ্রহণের হার ছিল ৮৬.৬ শতাংশ।
জরিপে আরও দেখা যায়, ৭৭.৯ শতাংশ উত্তরদাতা পুলিশের ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দুর্নীতির অবসান চেয়ে মতামত দিয়েছেন। এছাড়া, ৭৪.৯ শতাংশ উত্তরদাতা গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তি দেওয়ার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের আওতায় আসে। ৯৫ শতাংশ উত্তরদাতা ভুয়া ও গায়েবি মামলার অবসান চান।
এছাড়া, পুলিশের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তের জন্য ৬০ শতাংশ উত্তরদাতা একটি স্বাধীন সংগঠনের মাধ্যমে তদন্তের পক্ষে মতামত দিয়েছে। বর্তমানে পুলিশের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ তদন্তে স্বাধীন কোন সংগঠন নেই। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯ এর ১৮নং ধারায় পুলিশ তথা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তদন্তে কমিশনকে নিবৃত্ত রাখা হয়েছে।
জরিপে বাকি ৪০ শতাংশ উত্তরদাতা সমান দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছেন। এক অংশ মনে করেন, হাইকোর্ট-এর একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি স্থায়ী তদন্ত কমিশন পুলিশের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করতে পারে। অপর অংশ মনে করে, মানবাধিকার কমিশনকেই আইন সংশোধনের মাধ্যমে পুলিশের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে।
এছাড়া, পুলিশকে জবাবদিহি ও বিভিন্ন প্রভাবমুক্ত রাখার লক্ষ্যে একটি নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বা কমিশনের পক্ষে ৫৮.৯ শতাংশ উত্তরদাতা জরিপে মতামত দিয়েছেন। অন্যদিকে সাংবিধানিক কাঠামোর আওতায় পুলিশের জন্য স্বাধীন ন্যায়পাল প্রতিষ্ঠার পক্ষে মতামত দিয়েছেন ৪১.১ শতাংশ উত্তরদাতা।